চার দিনের সফরে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব এম ইমরুল কায়েস জানিয়েছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে (স্থানীয় সময় ৬টা ৫ মিনিট) বেইজিং বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এদিন সকাল ১১টা ১০ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তিনি বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। খবর বিডিনিউজের।
সরকার প্রধানের এই সফরে ২০টির মতো সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে এবং কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা হবে বলে রোববার এক ক্রিফিংয়ে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাত, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল ইকোনমি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহায়তা, ষষ্ঠ ও নবম বাংলাদেশ–চায়না ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পিপল টু পিপল কানেক্টিভিটি প্রভৃতি রয়েছে সমঝোতা স্মারকের তালিকায়।
তবে আলোচিত তিস্তা মহাপরিকল্পনায় চীনের অর্থায়নের বিষয়টি এ সফরে চূড়ান্ত হবে কিনা, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সফরের দ্বিতীয় দিন আজ মঙ্গলবার সকালে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিন লিকুনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই দিন সাং–গ্রি–লা সার্কেলে অনুষ্ঠেয় বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্মেলনে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। ওই সম্মেলনে অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল চীন সফর করবে। ওইদিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রী চায়নিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) চতুর্দশ জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
আজ বিকালে ঐতিহ্যবাহী তিয়েনআনমেন স্কয়ারে শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর রাতে বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন।
সফরের তৃতীয় দিন আগামীকাল বুধবার চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রধান লি চিয়াংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলসহ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবেন। এরপর শেখ হাসিনা ও লি চিয়াংয়ের উপস্থিতিতে ২০টির মতো সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে এবং কিছু প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে আয়োজিত ভোজের মধ্য দিয়ে গ্রেট হলে ওই সাক্ষাতের আনুষ্ঠিকতা সম্পন্ন হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ১০ জুলাই বিকালে চীনের গ্রেট হলে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার এই সফর উপলক্ষে বাংলাদেশ ও চীন একটি যৌথ বিবৃতি দেবে। ১১ জুলাই বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে চীন ত্যাগ করবেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ২টায় তার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়েছেন।