বুদ্ধের বাণী চর্চা সহনশীল সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে

বুদ্ধ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের অনুষ্ঠানে মেয়র

| রবিবার , ২২ জুন, ২০২৫ at ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুদ্ধ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে গতকাল শনিবার দুপুরে নগরীর একটি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত হয় এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সভাপতিত্ব করেন ডা. কিসিঞ্জার চাকমা এবং সঞ্চালনায় ছিলেন রোমেলা বড়ুয়া। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডা. প্রীতি বড়ুয়া, জয়সেন বড়ুয়া, দীপন কান্তি বড়ুয়া, বাবু লিটন বড়ুয়া, বাবু দেবজিৎ বড়ুয়া, বাবু রিপন কুমার বড়ুয়া, সুজন বড়ুয়া, কাজল বড়ুয়া, পরিতোষ বড়ুয়া, পীযুস বড়ুয়াসহ আরো অনেকে।

অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, গৌতম বুদ্ধ আমাদের অহিংসা, সহনশীলতা ও মৈত্রীর পথ দেখিয়েছেন। আজকের সমাজে এই মূল্যবোধগুলোকে ধারণ করাই সবচেয়ে জরুরি। বুদ্ধের বাণী চর্চা সহনশীল সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, আমি যখন চসিকের দায়িত্ব নিই, তখন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম চট্টগ্রামকে ক্লিন সিটি, গ্রিন সিটি, হেলদি সিটি ও সেফ সিটিতে রূপান্তর করবো। শুধু অবকাঠামো নয়, নাগরিকদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সহনশীলতা গড়ে তুলেই একটি নিরাপদ নগরী গঠন সম্ভব।

মেয়র বলেন, আজকের বুদ্ধ পূর্ণিমা আমাদের কাছে কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি একটি মানবিক উপলক্ষ। এই শহর সকল ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপদ হবেএটাই আমাদের অঙ্গীকার। তিনি আরও বলেন, আমরা একটি এমন সমাজ চাই যেখানে থাকবে না কোনো বিভেদ, বিদ্বেষ কিংবা হিংসা। যেখানে সবাই শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবেএটাই প্রকৃত উন্নত নগরীর চিত্র।

জাতীয়তাবাদের প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, এক সময় জাতীয়তাবাদ কেবল বাঙালিকেন্দ্রিক ছিল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এই কাঠামো ভেঙে সব জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ধারা প্রতিষ্ঠা করেন। আজ আমরা সেই ঐক্যের পথেই এগিয়ে যাচ্ছি। সকল সমপ্রদায়ের অংশগ্রহণেই গড়ে উঠবে একটি শক্তিশালী, মানবিক বাংলাদেশ।

মেয়র তার বক্তব্যে স্বাস্থ্যখাতের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে বলেন, আমরা কোভিড মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, মা ও শিশু হাসপাতাল, ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে এন্টিজেন ও আরটিপিসিআর টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে। যারা এখনও টিকা নেননি, তারা দ্রুত বুস্টার ডোজ নিয়ে নিন।

তিনি বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ প্রতিরোধে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যত্রতত্র ডাবের খোসা বা প্লাস্টিকপরিত্যক্ত সামগ্রী ফেলে পানি জমতে দেওয়া যাবে না। জমে থাকা পানিই ডেঙ্গুর উৎস। নাগরিকদের সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমি আশ্বাস দিতে আসিনি, আমি কাজ করতে এসেছি। চাই না, এই শহরের একজন নাগরিকও যেন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি শান্তিপূর্ণ, মানবিক ও উন্নত নগর গড়ে তুলি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতারেক রহমানের ৩১ দফা প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ
পরবর্তী নিবন্ধরেড ক্রিসেন্টের সাথে সমঝোতা চুক্তি করল ব্লাড টু ব্লাড