বুদ্ধদেব গুহ : অরণ্য ও প্রকৃতিপ্রেমী লেখক

| মঙ্গলবার , ২৯ আগস্ট, ২০২৩ at ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ

বুদ্ধদেব গুহ (১৯৩৬২০২১)। একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক। মূলত বন, অরণ্য এবং প্রকৃতি বিষয়ক লেখার জন্য তিনি বেশ পরিচিত। বহু বিচিত্রতায় ভরপুর এবং অভিজ্ঞতাময় তার জীবন। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুন রংপুরে জন্মগ্রহণ করেন বুদ্ধদেব গুহ। সেখানেই বেড়ে ওঠা। প্রথমে রংপুরের কারমাইকেল কলেজ, তারপরে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা। একদিকে পড়াশোনা আর অন্যদিকে গান। ইংল্যান্ড, ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশ, কানাডা, আমেরিকা, হাওয়াই, জাপান, থাইল্যান্ড ও পূর্বআফ্রিকা তার দেখা। পূর্বভারতের বনজঙ্গল, পশুপাখি ও বনের মানুষের সঙ্গেও তার সুদীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরঙ্গ পরিচয়। বুদ্ধদেব গুহর পেশাগত জীবন শুরু হয়েছিল চার্টার্ড অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। তিনি ছিলেন একজন নামী চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। তিনি দিল্লির কেন্দ্রীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গের আয়কর বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য নিযুক্ত হয়েছিলেন। আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রের অডিশন বোর্ডের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের সদস্য ছিলেন তিনি। বামফ্রন্ট তাকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বনবিভাগের বন্যপ্রাণী উপদেষ্টা বোর্ড পশ্চিমবঙ্গ বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ড এবং নন্দন উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য মনোনীত করে। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনে পরিচালনা সমিতির সদস্যও নিযুক্ত হয়েছিলেন। বুদ্ধদেব গুহ খুব সুন্দর ছবি আঁকেন। ‘জঙ্গলমহল’ তার প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ। তারপর বহু উপন্যাস ও গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি লেখক হিসেবে খুবই অল্প সময়ে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। তার বিতর্কিত উপন্যাস মাধুকরীদীর্ঘদিন ধরে বেস্টসেলার। ছোটদের জন্য তার প্রথম বই– ‘ঋজুদার সঙ্গে জঙ্গলে’। ঋজুদা তার সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় অভিযাত্রিক গোয়েন্দা চরিত্র। আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৭৬ সালে। প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ঋতু গুহ তার স্ত্রী। সুকণ্ঠ বুদ্ধদেব গুহ নিজেও একদা রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন। পুরাতনী টপ্পা গানে তিনি অতি পারঙ্গম। টিভি এবং চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে তার একাধিক গল্প উপন্যাস। বুদ্ধদেব গুহ ‘হলুদ বসন্ত’ উপন্যাসের জন্য আনন্দ পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৭৬ সালে। ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধআইআইইউসির শাটল ট্রেন বাস্তবায়ন চাই