একান্নবর্তী, যৌথ পরিবার এখন অতীত কাহিনি। বাস্তবে একমাত্র এখন অবাস্তব বাংলা সিরিয়ালে। কালের গতি ও বিবর্তনে মাসতুতো পিসতুতো মামাতো….ইত্যাদি সম্পর্কিতদের সঙ্গেই কি সম্পর্কে যোগাযোগ থাকছে? থাকছে না। সম্পর্ক রাখছে না বা প্রয়োজন মনে করছে না। প্রয়োজন একমাত্র অশৌচ পালনার্থে। কারও কারও ক্ষেত্রে উৎসব অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণে। অবশ্যই প্রাণের টানে নয়, দেখো কেমন আছি, সেটা দেখাতে।
ভাগ্নে ভাগ্নি মাসী পিসি মামা ইত্যাদি ইত্যাদি ‘তুতো‘ সম্পর্কিত বটেই নিজের আপন ভাই বোনেদের সঙ্গে যোগাযোগ? খবরাখবর দেয়া নেয়া রাখা? সময় নেই অজুহাত। আসলে সম্পর্কটা শিথিল হয়ে গেছে বা কেটে গেছে বা কাটতে দেয়া হয়েছে। দায় কার? বাবা কাকা মামা প্রমুখের নয়। দায়, উত্তরসূরিদের। দায়, নব্যযুগীদের। দায়, পাশ্চাত্য শিক্ষার। দায়, হৃদয়হীন রোবট–মানুষদের। ভুল বলছি কিছু? আয়নায় মুখ রাখুনতো। দেখুনতো নিজের আপনজনদের। আদরের ভাইপো, ভাইঝি, মামাতো, মাসতুতো, পিসতুতো…যাবতীয় তুতো ভাইবোনদেরকে যাদের অনেকেরই নাম আপনার দেয়া, যাদের বিয়ের পাত্রপাত্রী আপনারই খুঁজে আনা, কারও কারও সমপ্রদান পর্যন্ত হয়েছে আপনারই হাতে। তারা ক‘জন আপনার সঙ্গে সংযোগ রাখে। আপনি কতটা জানেন, ওদের ক’জন সন্তান। ওরা কে কেমন আছে?
একটা বয়স পর্যন্ত গুরুজনেরাই খোঁজ খবর নেয়, কে কেমন আছে? কিন্তু, বৃদ্ধ বয়সে? আসল শিক্ষা বলে, বৃদ্ধ বয়স্কদেরইতো খোঁজ খবর রাখা দায়িত্ব কর্তব্য প্রাচ্য মতে। দেশটা কেমন যেন পাশ্চাত্য মতে হয়ে যাচ্ছে।
একালের ওরা নিজেরাও কিন্তু পারস্পরিক সম্পর্ক–বিচ্যুত। তৃতীয় প্রজন্ম এই অচেনা অজানা সূত্রে পরস্পরের প্রেম ভালোবাসায় মা বাবার অজ্ঞাতে বিবাহও করতে পারে ভবিষ্যতে। বিশ্বাস, আগামী সেদিনটা দেখতে হবে না আমাকে।