বিশ্বাসের পক্ষে জীবন্ত উপন্যাস ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ

স্মরণসভায় জামায়াতের আমির

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২১ মে, ২০২৫ at ৭:৩৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সূর্যের মূল্য অমাবস্যার রাতে বুঝা যায়। গুণী মানুষ যতদিন বেঁচে থাকে ততদিন সমাজ তার মূল্য বুঝে না। কিন্তু যখন তার অস্তিত্ব অনুপস্থিতি দেখা দেয় তখন সবাই হাড়ে হাড়ে ঠের পায়। আবু জাফর মুহাম্মদ ওবায়েদুল্লাহর মৃত্যুর পর আমরা এখন সেটা টের পাচ্ছি। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিক্ষা, এই তিনটি উইংএর গুরু দায়িত্ব ছিল তার উপর। এই জায়গায় আমরা পেরেশান হয়ে লোক খুঁজছি। আল্লাহর সাহায্য আমরা পাবই, ইনশাল্লাহ। কিন্তু আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ’কে পাব না।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নগরের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে লেখক, গবেষক, রাজনীতিবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ’র স্মরণে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমির আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মানুষ দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একটা ভাগ ঈমানের পক্ষে। আরেক ভাগ অন্যদিকে। যারা ঈমানের পক্ষে দুনিয়ায় মানবকল্যাণে তারা অনেক কাজ করেন। অন্যদিকে যারা অবস্থান নেন তারাও মানবকল্যাণে করেন। কিন্তু দু’য়ের কাজের মর্যাদা মহান মাবুদের কাছে সমান নয়। আল্লাহ তায়ালার পূর্ণ আনুগত্য স্বীকার করে যারা কল্যাণমূলক কাজে নিজের মেধাকে নিয়োজিত করেন তাদের মর্যাদা আল্লাহর দরবারে অনেক উর্ধ্বে। ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ ছিলেন বিশ্বাসের পক্ষের জীবন্ত উপন্যাস। মানুষ বিভিন্নভাবে শিখে, দেখে, শুনে ও পড়ে শিখে। তিনি এমনই একজন মানুষ যাকে দেখা, শোনা ও পড়া যেত। কর্মবীর হিসেবে যাকে সঙ্গে পাওয়া যেত। এমন গুণ আল্লাহ বহু কম মানুষকে দান করেন।

তিনি বলেন, কবি মতিউর রহমান মল্লিক বাংলাদেশের সমাজজীবনে নতুন রেঁনেসা’র উত্থান ঘটিয়েছিলেন। আল্লাহ তাকেও আমাদের থেকে নিয়ে গেছে। তাদের সঙ্গীদের অনেকে চলে গেছেন। এরকম আরেকজন ছিলেন মোস্তফা জামান আব্বাসী, তিনিও চলে গেছেন। কবি মতিউর রহমান মল্লিকের যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, সেই শূন্যতা পূরণ হয়েছিল ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহকে দিয়ে।

মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ওবায়েদুল্লাহ ভাইয়ের তুলনা তিনি নিজেই। মানুষের সাথে দীর্ঘসময় থাকলে কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে তার সাথে সম্পর্কের অবনতি হতে পারে, কিন্তু এত দীর্ঘসময় থাকার পরও কারো সাথে ন্যূনতম কথা কাটাকাটিও কারো সাথে হয়নি ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর। বহুমুখী প্রতিভার ওবায়েদ ভাইয়ের শূন্যতা আমাদের কাঁদায়।

শাহজাহান চৌধুরী বলেন, অষ্টম শ্রেণি থেকে শুরু করে ড. আবু জাফর মুহাম্মদ ওবায়েদুল্লাহ’র জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমরা একসাথে কাজ করেছি। তিনি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের উজ্জ্বল নক্ষত্র।

চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামানের সভাপতিত্বে ও কবি অধ্যক্ষ চৌধুরী আব্দুল হালিম এবং গীতিকার গোলাম মোস্তফার যৌথ সঞ্চালনায় স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করেন চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি ড. আবু বকর রফিক আহমদ, মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মুহাম্মদ আলী আজাদী, . আ জ ম ওবায়েদুল্লাহর বড় ছেলে উমর মুসান্না। দোয়া ও মুনাজাত করেছেন মাওলানা এবিএম সিদ্দিকুল্লাহ।

স্মৃতিচারণ করেন অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ পারভেজ, শরীফ বায়জিদ মাহমুদ, আমিরুল ইসলাম, কবিতা আবৃত্তি ও বক্তব্য রাখেন মোস্তাক খন্দকার, চৌধুরী গোলাম মাওলা। কোরআন তেলওয়াত করেন এমরান হোসাইন ও আদনান করীম। ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি, পাঞ্জেরি শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীবৃন্দ।

উপস্থিত ছিলেন নগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মোহাম্মদ উল্লাহ ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, ডা. এ কে এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম১১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী শফিউল আলম, চট্টগ্রাম৮ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ডা. আবু নাছের, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, অধ্যক্ষ জাকের হোসাইন, হামেদ হাসান ইলাহী, এম এ গফুর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম কাস্টমসের সার্ভারে ত্রুটি, ৫ ঘণ্টা শুল্কায়ন বন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধইঞ্জিনে ঢুকল পাখি, ওড়ার পর ঢাকায় ফিরে এলো টার্কিশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ