বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্তরা প্রশিক্ষণ ছাড়া ক্লাসরুমে যেতে পারবেন না

চারুকলা যেখানে আছে সেখানেই থাকবে, উন্নত করব চবি মেরিন সায়েন্সেস অনুষদ ভবন উদ্বোধনে শিক্ষামন্ত্রী

চবি প্রতিনিধি | সোমবার , ৫ জুন, ২০২৩ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ পান। কিন্তু একটা সনদ নিয়ে পরদিনই অনেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ পেয়ে যান এবং ক্লাসরুমে যান প্রশিক্ষণ ছাড়াই। ভালো ছাত্র মানেই ভালো শিক্ষক হবেন, তা কিন্তু নয়। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে আগামী জুলাই মাস থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন তারা প্রশিক্ষণের বাইরে ক্লাসরুমে যেতে পারবেন না।

গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে চবির ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজের গবেষণা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নির্মিত একাডেমিক ভবন উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা সনদ নিয়ে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তা কর্মজগতের উপযোগী কিনা সেটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ঠিক করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মূল বিষয়ের বাইরেও ভাষা, আইসিটি, শিল্পোদ্যোগ, বিভিন্ন সফট স্কিল ও মূল্যবোধ শেখাতে হবে। আমাদের মড্যুলার এডুকেশন নিতে হবে।

তিনি বলেন, তথাকথিত গণতন্ত্রের কালে প্রতিদিন কারফিউয়ের মধ্যে আমরা কেমন ছিলাম তা আজকের শিক্ষার্থীদের জানতে হবে। সেই সময়কালে আমাদের স্বপ্ন দেখার অধিকার ছিল না। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনশীলতা থাকতে হবে, কিন্তু তা আগের শিক্ষাক্রমে একেবারে ছিল না। বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে চর দখলের লাঠিয়াল তৈরি করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে শিক্ষার দিকে নজরই দেওয়া হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার প্রচারণা নিয়ে তিনি বলেন, গবেষণার প্রচার হবে সাইটেশনের মাধ্যমে। যদি গবেষণাপত্র ভালো হয় তবে তা ভালো জার্নালে প্রকাশিত হবে। সেই গবেষণাপত্রের অটোমেটিক্যালি প্রচার হবে। গবেষণাপত্রের প্রচারের জন্য মাইকিং করতে হবে না। আর গবেষণাপত্র যদি মানসম্মত না হয় তা প্রকাশিতও হবে না। তাই আমাদের মানসম্মত গবেষণাপত্র প্রকাশ করতে হবে।

বাজেট প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাজেট নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে শিক্ষায় বাজেট বাড়ছে। শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয় নয়, আরও ৩৯টি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ প্রত্যক্ষপরোক্ষভাবে শিক্ষা খাতে আসে।

চবির চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যারা চবির চারুকলা ইনস্টিটিউটকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবি করেন তারা স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীর মধ্যে নেতৃত্ব পেয়ে খুশি না। তাই তারা ক্যাম্পাসে ফিরে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থীর নেতা হতে চান। যারা নেতৃত্ব চান তাদেরকে অনুরোধ করব তারা অনুষদ বদলে যেখানে অনেক শিক্ষার্থী আছে এমন অনুষদে চলে আসেন। সেখানেই নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, চারুকলার জন্য আলাদা পরিবেশ দরকার। এখন যেখানে আছে সেটা বিশেষ কারণে আছে। সেখানেই থাকতে দেন। সেটার সংস্কার এবং আরও উন্নত করতে যা যা করা দরকার তা আমরা করব।

চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপউপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হক এবং চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাহাড়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান
পরবর্তী নিবন্ধসকালে ৯৫ টাকা, সন্ধ্যায় ৬০ টাকা!