বিশ্বকাপের উত্তেজনা নেই চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে

চেন্নাই থেকে ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ১৩ অক্টোবর, ২০২৩ at ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

ভারতের চিকিৎসা নগরী চেন্নাই। অনেক নামি দামি হাসপাতাল রয়েছে এখানে। বিভিন্ন দেশ থেকে চিকিৎসা নিতে আসেন মানুষ এখানে। সেই চেন্নাইতে আজ বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপে তাদের তৃতীয় ম্যাচ খেলবে। প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। গতকাল দুপুরে নিউজিল্যান্ড আর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ দল অনুশীলন করেছে এম এ চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে। দারুণ সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি চেন্নাইয়ের দক্ষিণ পাশে ব্যস্ততম এলাকায় অবস্থিত। স্টেডিয়ামটির পশ্চিম পাশে বিখ্যাত মেরিনা বিচ। দক্ষিণ পাশে বিশ্বের অন্যতম সেরা এবং প্রাচীন পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়। তার পাশে রয়েছে আরেকটি অনন্য সুন্দর স্থাপনা রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা। স্টেডিয়ামের চারপাশে অসংখ্য হোটেল। চিকিৎসার জন্য আসা মানুষদের থাকার সবচাইতে বড় ভরসার জায়গা এখানে। যে হোটেলে আমি আছি সে হোটেলের বেশিরভাগই চিকিৎসার জন্য এসেছে। তাদের কাছে বিশ্বকাপের কোন মূল্য নাই। জীবন বাঁচানোটাই তাদের কাছে বড়।

এই শহরের যারা বাসিন্দা তাদের কাছেও বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোর তেমন কোন খবর নেই। শহরের প্রানকেন্দ্র হলেও মানুষদের মধ্যে নেই আজকের ম্যাচকে ঘিরে তেমন কোন উৎসাহ উদ্দীপনা। অনেকের মতে চেন্নাইতে বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে গত ৮ অক্টোবর। কারন সেদিন ছিল ভারতের ম্যাচ। প্রতিপক্ষও ছিল বিশ্বসেরা অস্ট্রেলিয়া। সেদিন স্টেডিয়াম ছিল ভর্তি। টিকেটের জন্য ছিল হাহাকার। কিন্তু বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার আজকের ম্যাচকে ঘিরে তেমন আগ্রহ নেই মোটেও। এত সুন্দর স্টেডিয়াম হলেও চারপাশে নেই উৎসুক জনতার ভীড়। স্টেডিয়ামের চার পাশ দিয়ে যে যার যার মত কাজ করছে চলা ফেরা করছে। কিন্তু স্টেডিয়ামের দিকে তাকানোরও যেন সময় নেই তাদের। তবে বিশ্বকাপকে ঘিরে চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামকে সাজানো হয়েছে বর্নিল সাজে। স্টেডিয়ামের মুল প্রবেশ পথ দিয়ে ভেতরে আসতেই চোখে পড়বে মহেন্দ্র সিং ধোনির বিশাল প্রতিকৃতি। যদিও ধোনি চেন্নাইয়ের ছেলে নন। কিন্তু আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসে খেলা এবং শিরোপা জেতানোর সুবাধে ধোনি চেন্নাইয়েরই যেন সন্তান হয়ে গেছে।

স্টেডিয়ামের প্রধান প্রবেশ পথগুলোতে রয়েছে কিছু নিরস্ত্র পুলিশ। তারা আবার খুব সহযোগিতা মনোভাব সম্পন্ন। তাদেরকে কেউ যেমন বিরক্ত করে না আবার তারাও কাউকে বিরক্ত করে না। যতটা পারে মানুষকে সহযোগিতার চেষ্টা করে। তবে স্টেডিয়ামের মূল নিরাপত্তার কাজটুকু করে গ্রুপ ফোর এর সিকিউরিটিরা। তাদের সামনে গিয়ে কেউ ভয় ভীতি দেখায় না। আবার তারাও কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করে না। কেবল তাদের যে কাজ সেটাই তারা করে। গতকাল বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ডের অনুশীলন চলাকালে প্রেসবক্সে যারা ছিল তারা সবাই বাংলাদেশী। ঢাকা থেকে প্রায় ৩০ জনের মত সাংবাদিক গেছে ভারতে এই বিশ্বকাপ কাভার করতে। তারা সবাই বাংলাদেশকে অনুসরণ করছে। যেখানে বাংলাদেশের খেলা সেখানেই দল বেঁধে চলে যাচ্ছে। তাই গতকাল চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামের প্রেস বক্সে কেবলই বাংলাদেশী সাংবাদিকরাই ছিল। নিউজিল্যান্ডের দু একজন আর ভারতের দু একজন সাংবাদিক ছিল যারা কাজ করছে এই ম্যাচ নিয়ে।

আজকের ম্যাচের পর চেন্নাইতে আরো দুটি ম্যাচ হবে। যেখানে আগামী ১৮ অক্টোবর নিউজিল্যান্ড খেলবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। আর এই মাঠে শেষ ম্যাচটি হবে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে আগামী ২৩ অক্টোবর। কাজেই আজকের ম্যাচ ছাড়াও আগামী দুই ম্যাচেও যে খুব বেশি উত্তেজনা থাকবে না সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। আইপিএলের কারণে চেন্নাইয়ের চিদাম্বারাম স্টেডিয়াম বিশ্বের ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে বেশ পরিচিত। তবে দারুণ সুন্দর এবং একেবারে সাজানো গুছানো একটি স্টেডিয়াম এই চিদাম্বারাম স্টেডিয়াম। কিন্তু বিশ্বকাপের বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচের আগের দিনও এই স্টেডিয়ামে নেই কোন উম্মাদনা। নেই কোন হৈ হুল্লুড়। অথচ আমাদের দেশে বিশ্বকাপতো বটেই যেকোন দ্বিপাক্ষিক সিরিজকে ঘিরেও উচ্ছাসের শেষ থাকে না। কিন্তু সে দিক থেকে কেমন যেন ব্যতিক্রম চেন্নাই। অবশ্য সেটা ভারতের ম্যাচ না হওয়ার কারণে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের স্পিন সামলাতে প্রস্তুত নিউজিল্যান্ড
পরবর্তী নিবন্ধবন্দরকে সহজেই হারালো উদয়ন সংঘ