কাতারে চলতি ফিফা বিশ্বকাপে হেড কোচ হিসেবে প্রথম লাল কার্ড দেখলেন দক্ষিণ কোরিয়ার পাওলো বেন্টো। ঘানার বিরুদ্ধে এদিন ২–৩ গোলে পরাস্ত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। যার ফলে শেষ ষোলোয় যাওয়ার লড়াইটা কঠিন হয়ে গিয়েছে তাদের। গ্রুপ পর্বের শেষ তথা মাস্ট উইন ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার ডাগআউটে থাকতে পারবেন না বেন্টো।
ম্যাচে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর স্টপেজ টাইম হিসেবে আরও ১০ মিনিট সময় দেন রেফারি অ্যান্টনি টেলর। এই সময় একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে সমতা ফেরার মরিয়া প্রয়াস চালাতে থাকে দক্ষিণ কোরিয়া। একেবারে শেষ লগ্নে দক্ষিণ কোরিয়া একটি কর্নার আদায় করে নেয়। সমতা ফেরানোর শেষ সুযোগ ছিল এই কর্নার থেকেই। কিন্তু ১০ মিনিট পেরিয়ে যাওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া কর্নার নেওয়ার আগেই শেষ বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দক্ষিণ কোরিয়া শিবির এবং সাপোর্ট স্টাফরা। হেড কোচ বেন্টো ছুটে যান ইংলিশ প্রিমিয়ার
লিগ খেলানো রেফারি টেলরের দিকে। সঙ্গে সঙ্গে বেন্টোকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।
সুইজারল্যান্ড ম্যাচে চোট নিয়ে কোথায় ছিলেন নেইমার
চোটের জন্য সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচের দিন মাঠেও গেলেন না নেইমার। হোটেলেই তার চিকিৎসা চলল। ব্রাজিল দলে চোট পাওয়া আর এক ফুটবলার দানিলো অবশ্য বাকি দলের সঙ্গে স্টেডিয়ামে গেলেন উৎসাহ দিতে। জানা গিয়েছে, হোটেলের ঘরে নেমারের ফিজিয়োথেরাপির সেশন ছিল। তাই দলের সঙ্গে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। হোটেলের ঘরে বসেই খেলা দেখার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। দলের তরফেও কোনও আপত্তি করা হয়নি। দলের প্রধান লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব নেইমারকে সুস্থ করে তোলা। সে কারণেই চিকিৎসকরা দিন রাত খাটছেন। গতকালের ম্যাচে নেমারের জায়গায় নামানো হয়েছে ফ্রেডকে। রদ্রিগোর খেলার কথা থাকলেও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ফুটবলারকেই বেছে নেন তিতে। আক্রমণ ভাগে রিচার্লিসনের পাশে জুড়ে দেওয়া হয়েছে লুকাস পাকুয়েতাকে। রাইট ব্যাকে দানিলোর জায়গায় স্বাভাবিক ভাবেই খেলছেন এদের মিলিটাও।
জার্মান খেলোয়াড়দের জবাব দিল কাতারিরা
এবারের বিশ্বকাপে বেশ কয়েকটি আলোচিত বিষয়ের মধ্যে রয়েছে সমকামিতা। কাতার কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু বিষয়ে কঠোর আইন করেছে এবারের বিশ্বকাপে। মুসলিম প্রধান দেশ কাতারে সমকামিতার কোনো স্থান নেই। বিষয়টি মানতে পারেনি জার্মানি ফুটবল দল। তাই বিশ্বকাপে প্রতিবাদ জানাতে ‘ওয়ান লাভ’ আর্মব্যান্ড পরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা। কিন্তু ফিফার নিষেধাজ্ঞার হুমকির পর সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে জার্মানিসহ ইউরোপের সাতটি দেশ। তবে জাপানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে টিম ফটোশুটে মুখ ঢেকে এর প্রতিবাদ জানায় জার্মানি। কিন্তু কাতারি সমর্থকদের কাছে তা কেবলই ‘ভন্ডামি’ মনে হয়েছে। সেই ভন্ডামির জবাব দেওয়ার জন্য স্পেন–জার্মানির ম্যাচটি বেছে নেয় তারা। টেনে আনে সাবেক জার্মান মিডফিল্ডার মেসুত ওজিলের অতীত। আল বায়িত স্টেডিয়ামে ম্যাচ চলাকালীন অনেকেই মুখ ঢেকে কাগজে স্কেচ করে বানানো ওজিলের ছবি দেখান।
জার্মানির হয়ে বিশ্বকাপ জিতলেও শেষটা সুন্দর হয়নি ওজিলের। ২০১৮ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছিল জার্মানরা। দুঃস্বপ্নের এই আসরের পর আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান ওজিল। জার্মানির জার্সি গায়ে বেশ কয়েকবার বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন ওজিল। এক বিবৃতিতে ইস্তাম্বুল বাসাকশাহিরের হয়ে খেলা ওজিল বলেছিলেন, যখন আমি জিতি তখন আমি জার্মান। আর হেরে গেলে শরণার্র্থী হয়ে যাই।
জার্সিতে লাথি বিতর্ক, মেসির বিরুদ্ধে অভিযোগ
হঠাৎ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। মেঙিকোর বিপক্ষে ২–০ গোলের জয়ে বিশ্বকাপে টিকে আছে আর্জেন্টিনা। এই জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই ড্রেসিং রুমে উৎসবে মাতেন আলবিসেলেস্তে ফুটবলাররা। ভিডিওটি সেখানকার। আর্জেন্টিনার ড্রেসিং রুমে মেসির একটি জার্সি পড়ে থাকতে দেখা যায়। অনেকে দাবি করছেন, ইচ্ছেকৃতভাবে সেটি পায়ের নিচে রেখেছেন মেসি। এ নিয়ে তো তাকে এক ধরনের হুমকিই দিয়ে রেখেছেন মেঙিকোর বঙার কানসেলো। তিনি টুইট করে লিখেছেন, আমাদের জার্সি ও জাতীয় পতাকা দিয়ে মেসির মেঝে পরিষ্কার করা সবাই দেখেছেন? আরেকটি টুইটে আলভারেজ লিখেছেন, আমার সামনে যেন তাকে (মেসি) পড়তে না হয়, সেজন্য তার সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা উচিত।
কানসেলোর টুইটের জবাবে আগুয়েরো লিখেছেন, মিস্টার কানসেলো, অযুহাত অথবা সমস্যার দিকে তাকাবেন না। নিশ্চিতভাবেই আপনি ফুটবলের ব্যাপারে কিছু জানেন না আর ড্রেসিং রুমে কী হয় সেটাও। ঘামের কারণে জার্সি সবসময়ই মাটিতে থাকে ম্যাচের পর। এরপর যদি আপনি ভালোভাবে দেখেন, সে পা থেকে বুট খুলতে গিয়ে ভুল করে পা লেগেছে। তবে ভিডিও দেখে মেসি জার্সিকে অশ্রদ্ধা করেছেন বলে মনে হয়নি।