শুধুমাত্র একটি পরিবারের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রীয় বিশেষ সুবিধা প্রদান বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে ‘জাতির পিতার পরিবার–সদস্যদের নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪’–এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। একই সঙ্গে ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (Special Security Force ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’–এর খসড়ারও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। খবর বাংলানিউজের।
গতকাল বৃহস্পতিবার (আগস্ট ২৯) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, বিগত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে ‘জাতির পিতার পরিবার–সদস্যদের নিরাপত্তা আইন, ২০০৯ (২০০৯ সালের ৬৩ নম্বর আইন) প্রণয়ন ও জারি করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের ১৫ মে উক্ত আইন অনুসারে বিশেষ নিরাপত্তা এবং সুবিধাদি প্রদানের গেজেট জারি করা হয়। কেবল একটি পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় বিশেষ সুবিধা প্রদানের জন্য আইনটি করা হয়েছিল যা একটি সুস্পষ্ট বৈষম্য। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সব বৈষম্য দূরীকরণে দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করেছে।
‘বর্তমানে সংসদ ভাঙা অবস্থায়’ রয়েছে বিধায় এ বিষয়ে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করে এ আইনটি রহিতকল্পে অধ্যাদেশ জারি করা প্রয়োজন। এ প্রেক্ষাপটে, উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে ‘জাতির পিতার পরিবার–সদস্যরা নিরাপত্তা (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৪’–এর খসড়া লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং সাপেক্ষে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করা হয়।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন সংশোধন : উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (Special Security Force ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’–এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান–এর পরিবারের সদস্যরা’ এবং কোনো রাষ্ট্রের রাষ্ট্র–প্রধান বা সরকার প্রধান এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষিত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (Special Security Force ) আইন, ২০২১’ প্রণয়ন করা হয়।
ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টাদের সমন্বয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এমন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (ঝঢ়বপরধষ ঝবপঁৎরঃু ঋড়ৎপব) আইন, ২০২১’–এর আওতায় প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এছাড়া, বিদ্যমান আইনের আওতায় ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান–এর পরিবারের সদস্যদের’ নিরাপত্তা প্রদান সংক্রান্ত বিধানগুলো প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় কার্যকর করা সম্ভব নয় বিধায় বাতিল করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ায় উক্ত আইনের কতিপয় বিধান বিলোপসহ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা বিধানের বিষয়টি সংযোজনপূর্বক ‘বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (Special Security Force ) সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪’ উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করা হয়।