বিশুদ্ধ নিয়ত এবাদতকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অন্যতম নিয়ামক

মিরাজুন্নবী (দ.) মাহফিলে ছৈয়্যদ মুনির উল্লাহ্‌ আহমদী

| মঙ্গলবার , ১ মার্চ, ২০২২ at ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

মানুষ স্রষ্টার শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি আশরাফুল মাখলুকাত। খালেছ অন্তরে মানুষ যখনই যেভাবে ডাকে আল্লাহ পাক সে ডাকে তখনি সাড়া দেন। রিয়া ও নফস হতে মুক্ত হলেই এবাদত কামিয়াবির পর্যায়ে পৌঁছে। এবাদতকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অন্যতম নিয়ামক হলো খুলুছিয়ত তথা বিশুদ্ধ নিয়ত। প্রিয় রাসুল (দ.)-এর সমস্ত কর্মকাণ্ড এখলাসের উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত। খলিফায়ে রাসুল হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম (রা.) এখলাসের সুরভিত সৌন্দর্যের অলংকারে সমগ্র জীবনকে নবী প্রেমে রাঙিয়েছেন। পথহারা মানুষকে সঠিক পথের দিশা দিতে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আঁধারে আলোকবর্তিকা হয়ে জ্বলে উঠেছেন নূরে মোস্তফার ঐশী আহ্বানে। তাইতো খুলুছিয়ত প্রতিষ্ঠায় কালশ্রেষ্ঠ কিংবদন্তি খলিফায়ে রাসুল হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্‌হু।
গতকাল সোমবার নগরীর বায়েজিদস্থ গাউছুল আজম সিটিতে দিন-রাতব্যাপী অনুষ্ঠিত ৬৯তম পবিত্র মিরাজুন্নবী (দ.) উদ্‌যাপন ও কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা
খলিফায়ে রাসূল (দ.) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্‌হুর স্মরণে অনুষ্ঠিত ঈছালে ছাওয়াব মাহফিলে মোর্শেদে আজম আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্‌ আহমদী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
এদিন ফজরের নামাজের পর খতম শরীফ, মোরাকাবা, ঈছালে ছাওয়াব, মিলাদ-কিয়াম ও মুনাজাতের পর খতমে কুরআন অদায়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ওরছের কর্মসূচি। পূর্ব ঘোষিত তারিখ থেকে মহিলা, প্রবাসী, তরিক্বতপন্থী ও উপস্থিত মুসলিম জনতা সর্বমোট ১৬১২৭ টি খতমে কোরআন ২০৫৭ টি খতমে তাহলীল এবং ১৫৭ টি খতমে ইউনুচ আদায় করেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও কাগতিয়া দরবার থেকে পূর্বেই ঘোষতি হয়েছিল-ওরছে কারোর কাছ থেকে গরু-মহিষ-ছাগল, টাকা-পয়সা, নজর-নেওয়াজ ইত্যাদি নেওয়া হবে না, চলবে না শরীয়ত পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপ, শুধু কোরআন-সুন্নাহর পূর্ণ অনুসরণে পালিত হবে এ মহামনীষীর সালানা ওরছ। অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে সবার মুখে মুখে উচ্চারিত হয়েছে সুমধুর সুরে কুরআন তিলাওয়াত, তাহলিল ও নিম্নস্বরে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌ জিকির এবং নবী (দ.)-এর শানে দরূদ পাঠ। এ যেন এক অভূতপূর্ব দৃশ্য, প্রশান্তিময় পরিবেশ। শুধু দেশের নয়, সপ্তাহজুড়ে বাংলাদেশে আসা বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশ-মধ্যপ্রাচ্য, সৌদিআরব, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কাগতিয়া দরবারের শত শত অনুসারী এতে অংশ নেয়। বিদেশে অবস্থানরত এ মনীষীর অনুসারীরাও বাদ পড়েননি, তারাও এদিন স্বস্ব স্থানে বসে আর মহিলারা নিজেদের ঘরে বসে কুরআন তিলাওয়াত করতে থাকেন।
সালানা ওরছে যোগদানের উদ্দেশ্যে সকাল থেকেই চট্টগ্রামের আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, সীতাকুণ্ড, বোয়ালখালী, আনোয়ারা, পটিয়া ছাড়াও রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, মহেশখালী থেকে গাড়িযোগে কাগতিয়া দরবারের অসংখ্য অনুসারী, ভক্ত ও সাধারণ মুসলমানেরা সালানা ওরছে আসতে থাকে। চট্টগ্রাম ছাড়া ফেনী, কুমিল্লা, বি.বাড়িয়া, চাঁদপুর ও ঢাকা থেকেও কাগতিয়া দরবারের হাজার হাজার অনুসারী ও মুসলমানেরা উপস্থিত হন। সালানা ওরছে যোগদানের জন্য শুধু দেশের নয়, বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সৌদিআরবসহ ওমান, কাতার, কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, আবুধাবী, শারজাহ্‌ হতেও কাগতিয়া দরবারের অনুসারীরা সপ্তাহখানেক পূর্ব থেকে বাংলাদেশে আসেতে থাকেন। সালানা ওরছ উপলক্ষ্যে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আলোকসজ্জিত করা হয়। পরিশেষে মিলাদ কিয়াম, প্রিয় রাসুল (দ.) ও খলিফায়ে রাসুল হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম (রা.)-এর খুলছিয়তের ওসিলায় দেশ জাতির কল্যাণ, উন্নয়ন, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি এবং হযরত গাউছুল আজম (রা.)-এর ফুয়ুজাত কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে এখলাসময় এবাদতের মহাকর্মযজ্ঞ সমাপ্ত হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাড়ে ২১ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধশেষটা রাঙানো হলো না