চট্টগ্রাম বন্দরে কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ১০৮ গাড়ির নিলামে ৫৬৭টি দরপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ৪১৮ এবং ই-অকশনে (অনলাইন) জমা পড়েছে ১৪৯টি। গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম কাস্টমসে দরপত্রের বক্স খোলার পর এ সব তথ্য জানান চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার মো. আল আমিন। নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ ও ১৩ জুন ই-অকশনে (অনলাইন নিলাম) ও ম্যানুয়াল পদ্ধতির নিলামে বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) কাস্টমসের স্থাপিত বক্সে দরপত্র জমা দেন। বিলাসবহুল ১০৮ গাড়ির মধ্যে রয়েছে জার্মানি, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তৈরি বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ, ল্যান্ড ক্রুজার, ল্যান্ড রোভার, জাগুয়ার, মিতসুবিশি, টয়োটা ও লেক্সাস জিপ।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার মো. আল আমিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, এবারের নিলামে অনলাইনে দরপত্র জমা পড়েছে ১৪৯টি। এ ছাড়া ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে চট্টগ্রাম কাস্টমসে স্থাপিত দরপত্রের বক্সে ২৯৬টি, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বক্সে ১৫টি এবং ঢাকায় স্থাপিত দরপত্রের বক্সে ১০৭টি দরপত্র জমা পড়ে।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, কার্নেট সুবিধার গাড়িগুলো প্রায় ১০-১৫ বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরে আটকা পড়ে আছে। ইনভেন্ট্রি করে ২০১৬ সালের আগস্টে ৮৫টি, ২০১৭ সালের মে মাসে ১১৩টি, ২০১৮ সালের মে মাসে ১১১টি গাড়ি এবং ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল চতুর্থবারের মতো ২২টি গাড়ি নিলামে তোলা হয়। কিন্তু প্রতিবারই দামে অসামঞ্জস্য থাকায় দরদাতাদের কাছে গাড়ি বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ গত বছরের ৩ ও ৪ নভেম্বর ই-অকশন ও ম্যানুয়াল নিলামে ১১২টি গাড়ি নিলামে তোলা হয়। এর মধ্যে ১১০টি গাড়িতে দরপত্র জমা দেন বিডাররা। জমা দেয়া দরপত্র ও অন্যান্য শর্ত যাচাই করে মাত্র ৩টি গাড়ি বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কার্নেট সুবিধায় গাড়ি আমদানির সুবিধা দেয়া হয়। তবে নির্দিষ্ট সময় পর আবার সেগুলো ফিরিয়ে নিতে হয়। বাংলাদেশে যারা শুল্কমুক্ত সুবিধা ব্যবহার করে এ সব গাড়ি এনেছেন তাদের বেশিরভাগই প্রবাসী বাংলাদেশি, যাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের অনেকেই এ সব গাড়ি কার্নেট সুবিধায় এনে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সব গাড়ি আমদানির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হলে একসময় আমদানিকারকরা গাড়িগুলো খালাস করেননি।