বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর ও উপ-দপ্তর সম্পাদকের সাথে বৃহত্তর চট্টগ্রামে আ. লীগের ৭ সাংগঠনিক জেলার (চট্টগ্রাম মহানগর, চট্টগ্রাম উত্তর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা) দপ্তর ও উপ-দপ্তর সম্পাদকদের এক মতবিনিময় সভা গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টায় ভিডিও কনফারেন্সে (জুম) অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় জেলার দপ্তর ও উপ দপ্তর সম্পাদকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকল নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং দলীয় প্রচার-প্রচারণা জোরদার করার তাগিদ দেয়া হয়। একই সাথে সরকারের সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তৃণমূল পর্যায়ে কীভাবে তুলে ধরা যায় সেই ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি বিরোধী পক্ষের অপপ্রচারের পাল্টা জবাব দেওয়ার ব্যাপারেও পরামর্শ দেয়া হয়। কনভেনশনাল মিডিয়ার পাশাপাশি এখন অনলাইন মিডিয়ার বিস্তারে দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রচার-প্রচারণা এবং নিজেদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে কাজ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর বিভাগ থেকে ধাপে ধাপে ৮টি বিভাগের জেলাসমূহের দপ্তর ও উপ-দপ্তর সম্পাদকদের সাথে এই সভার আয়োজন করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিভাগে সাংগঠনিক জেলা ১৫টি। গতকাল চট্টগ্রাম বিভাগের ২য় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৩ জুলাই বিকাল ৩টায় ৮ টি সাংগঠনিক জেলার দপ্তর ও উপ-দপ্তর সম্পাদকদের নিয়ে আগের সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাজের ব্যবস্থাপনায় তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় বলা হয়- ২০০৮ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপান্তরের কারণে আজ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে থেমে না থেকে সংগঠনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে নেতৃবৃন্দ উল্ল্লেখ করেন।সভার শুরুতে বৈশ্বিক সংকট করোনা মহামারির মাঝে যে, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সাহসের সাথে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তা তুলে ধরা হয়। তিনি সকলকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলার উপরে জোর দিয়েছেন। করোনায় মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেজন্য দলীয় সভাপতির নির্দেশে সরকারের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীরা খাদ্য সহায়তাসহ করোনা সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করছে। করোনাকালীন সময়ে একজন মানুষও যাতে খাদ্যভাবে কষ্ট না পায় তার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
সভার প্রারম্ভে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান আলোচ্য সূচি উপস্থাপন করেন এবং কী কারণে সভাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেটা তুলে ধরেন।
এরপর দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বক্তব্যে বলেন, ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পরে জাতির সামনে সুনির্দিষ্ট কোন টার্গেট রেখে কেউ দেশ পরিচালনা করেননি। দীর্ঘ সময় পর জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসলে বিশেষ করে ২০০৮-এর নির্বাচনের আগে জাতির সামনে সুনির্দিষ্ট টার্গেট রেখে রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা করেন। যার মধ্যে অন্যতম হল- ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ। আওয়ামী লীগ সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনা সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার জোরদার করার নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
তিনি আরও বলেন, তথ্য আদান-প্রদানে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সংগঠনের কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। সংগঠন ডিজিটালাইজেশনের উপর ডিজিটালাইজড সরকারের স্থায়িত্ব নির্ভর করে।
আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন (সি আর আই)-এর পক্ষ থেকে সভা পরিচালনায় কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হয়। সি আর আই এর পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটির কো-অর্ডিনেটর তন্ময় আহমেদ এবং প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব আশরাফ সিদ্দিকী বিটু ও ডাটাবেজ টিমের সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আদিত্য নন্দী সভায় সংযুক্ত ছিলেন। এছাড়া সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের ৭টি জেলার সংযুক্ত দপ্তর ও উপ-দপ্তর সম্পাদকবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে শক্তিশালী। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে কোন প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নেতৃবৃন্দ।