নিয়োগবিধি সংশোধন করে বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে দেশব্যাপী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের লাগাতার কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। গতকাল এ কর্মবিরতি পালনকালে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় হাজার হাজার নারী ও শিশু টিকা নিতে পারেনি বলে জানা গেছে। এছাড়া স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা রোগীরাও নানা ধরনের ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছেন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর : ফটিকছড়ি প্রতিনিধি জানান, নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতন বৈষম্যেসহ বিভিন্ন দাবিতে সারাদেশের মতো ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারীগণ কর্মবিরতি পালন করেছেন। কর্মবিরতির প্রথম দিনে ফটিকছড়ি উপজেলাতে টিকা নিতে পারেনি প্রায় ৩ হাজার নারী ও শিশু। ‘ভ্যাকসিন হিরো সম্মান, স্বাস্থ্য সহকারীর অবদান’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন ফটিকছড়ি শাখার স্বাস্থ্য সহকারীরা তাদের দাবি সম্বলিত ব্যানার, পেস্টুন নিয়ে নাজিরহাটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেন। এসময় বক্তব্য রাখেন মুহাম্মদ রমজান আলী, লোকমান হোসেন বাদশা, সাকিলা আকতার, রুপনা বড়ুয়া, মুহাম্মদ আজম, মহিন উদ্দিন, সৈয়দ বকর সিদ্দিকী, চিত্তরঞ্জন দাস, নরুল আজম চৌধুরী ও জহির উদ্দিন বাবার প্রমুখ।
সীতাকুণ্ড প্র্রতিনিধি জানান, নিয়োগবিধি সংশোধন করে বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন সীতাকুণ্ড উপজেলা শাখা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা এই কর্মবিরতি শুরু করেন। দাবি পূরণে প্র্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তারা। এতে সীতাকুণ্ডে কর্মরত স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারীসহ ৬৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী অংশ নেন। এসময় বক্তব্য রাখেন হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন সীতাকুণ্ড উপজেলা শাখার সভাপতি সুরেশ চন্দ্র দাশ, সাধারণ সম্পাদক কাজী আরিফ উদ্দিন।
তারা বলেন, বর্তমানে স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারী সবাই ১৬তম গ্রেডে বেতন পেয়ে থাকেন। নিয়োগবিধি সংশোধন করে তাদের বেতন যথাক্রমে ১১, ১২ ও ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করতে হবে।
চন্দনাইশ প্র্রতিনিধি জানান, চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন। সকাল থেকে টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ রেখে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সম্মুখে এ কর্মসূচি শুরু করা হয়। এসময় আলোচনা সভায় দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের নেতা পুপুল চৌধুরী, কাঞ্চন ভট্টচার্য্য, শামশুল আলম, কাজী রিদুয়ান, নজরুল ইসলাম, শাহেদ আলী, সিমা ধর, লোপা দত্ত, শাহ ইসলাম, ফেরদৌস মিয়া, রূপম বড়ুয়া, শাহীন আকতার, মনোয়ারা বেগম, করিমুন্নেছা, রোকেয়া আকতার, সিমলা সেন, অনিতা দে, আবদুল আজিজ, সুকেশ দাশ প্র্রমুখ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৮ সালে স্বাস্থ্য সহকারীদের টেকনিক্যাল স্কেল প্র্রদানের ঘোষণা দেন। কিন্তু অদ্যাবধি তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ কর্মসূচি চলবে বলেও ঘোষণা দেন স্বাস্থ্য সহকারীরা।
সন্দ্বীপ : স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশন সন্দ্বীপ উপজেলা শাখার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে সন্দ্বীপেও সকালে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি পালন করেছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশন সন্দ্বীপ উপজেলা শাখার আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালামের সঞ্চালনায় এ সময় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি মাসুদ রানা, পরিদর্শক নেতা আবু সৈয়দ, নাজিম উদ্দীন মিশু, মুনসুর আলম, সাবিনা ইয়াছমিন, জাহাঙ্গীর আলম, আবু তাহের, স্বাস্থ্য পরিদর্শক হুমায়ুন রশিদ, আবদুল ওয়াদুদ, খালেদা বেগম নুর হাসনা মিলি প্রমুখ।
এসময় বক্তারা প্র্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী টেকনিক্যাল স্কেল অবিলম্বে বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।