বিনা প্রশ্নে পাচার করা অর্থ আনার প্রস্তাব অনৈতিক : টিআইবি

| শনিবার , ১১ জুন, ২০২২ at ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ

প্রস্তাবিত বাজেটে ‘বিদেশে পাচার করা অর্থ’ বিনা প্রশ্নে ফেরত আনতে আয়কর অধ্যাদেশে নতুন বিধান সংযোজনের প্রস্তাব ‘অনৈতিক’ বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রতিক্রিয়ায় প্রস্তাবটি বাতিলের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সংস্থাটি।
গতকাল সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন বাজেটের জন্য এ প্রস্তাব অসাংবিধানিক, সংশ্লিষ্ট আইনের সাথে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক এবং অর্থপাচারের মতো ঘৃণিত অপরাধের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার নামান্তর। খবর বিডিনিউজের।
বৃহস্পতিবার আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বাড়াতে বিদেশে থাকা অর্থ ও সম্পদ আয়কর রিটার্নে ‘বিনা প্রশ্নে’ প্রদর্শনের সুযোগ দিতে ছাড় দেওয়ার ঘোষণা দেন। তবে নতুন বাজেটে প্লট, ফ্ল্যাট এবং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের পাশাপাশি নগদ টাকা, ব্যাংক আমানত, বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়ী স্কিমে গচ্ছিত অর্থ বিনা প্রশ্নে সাদা করার সুযোগ আর না রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
বিদেশে অর্থ সম্পদের অ্যামনেস্টির পদক্ষেপের সমালোচনা করে গতকাল বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থমন্ত্রী যেভাবেই ব্যাখ্যা করেন না কেন নামমাত্র কর দিয়ে প্রশ্নহীনভাবে পাচার করা অর্থ বিদেশ থেকে আনার সুযোগ স্পষ্টতই অর্থ পাচারকারীদের অনৈতিক সুরক্ষা ও পুরস্কার প্রদান। অথচ অর্থপাচার রোধ আইন ২০১২ এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অর্থপাচার গুরুতর অপরাধ, দেশের আইন অনুযায়ী যার শাস্তি পাচার করা অর্থ বাজেয়াপ্ত করা এবং তার দ্বিগুণ জরিমানা ও ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড নির্ধারিত রয়েছে। তার মতে, এ সুযোগ অর্থপাচার ও দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে, যা সংবিধান পরিপন্থী এবং প্রধানমন্ত্রীর ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা’ ঘোষণার অবমাননাকর।
সৎ করদাতাদের জন্য এই প্রস্তাব প্রকটভাবে বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৈধ করদাতারা ৭ শতাংশের চেয়ে কমপক্ষে তিন গুণ হারে কর দিয়ে থাকেন। এটি বৈষম্য ও সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থী। অবিলম্বে এ সুযোগ বাতিল করতে হবে এবং অর্থপাচারকারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য যে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইনি প্রক্রিয়া নির্ধারিত রয়েছে তা অনুসরণ করে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিদেশে অর্জিত অর্থ ও সম্পদ দেশের অর্থনীতির মূলধারায় সংযুক্তির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ ও আয়কর রাজস্ব বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, বারবার সুযোগ দিয়েও দেশের অর্থনীতিতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাশিত ফল বয়ে আনেনি, সরকারও আকাক্সিক্ষত রাজস্ব পায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাচারকারীদের ছাড় নৈতিক নয়, যৌক্তিকও নয়
পরবর্তী নিবন্ধশেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস আজ