বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ারসুযোগ শেষ, ফিরছে ‘না’ ভোট

অনিয়মে পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা চায় ইসি হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে বাতিল হবে এমপি পদ

আজাদী ডেস্ক | মঙ্গলবার , ১২ আগস্ট, ২০২৫ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ বন্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে একজন প্রার্থী থাকলে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে ‘না’ ভোটের সঙ্গে। গতকাল সোমবার কমিশন সভা শেষে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। এদিকে অনিয়ম হলে প্রয়োজনে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে রাখার বিধান যুক্ত করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। একই সঙ্গে হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে ভোটের পরও প্রার্থিতা বাতিলের বিধান করাসহ একগুচ্ছ সংশোধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে। এসব সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করে আগামী সপ্তাহে সরকারের অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা বলেন সানাউল্লাহ। খবর বাংলানিউজ ও বিডিনিউজের। ইসি সানাউল্লাহ বলেন, কোনো আসনে একজন প্রার্থী থাকলে তিনি আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন না। এক্ষেত্রে ‘না’ ভোটের সঙ্গে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। এক্ষেত্রে ‘না’ ভোটের চেয়ে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী বেশি ভোট পেলেই কেবল তিনি নির্বাচিত হবেন। আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকেও অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কোথাও একজন প্রার্থী হয়, যে বিনা ভোটে নির্বাচিত হবে। এক্ষেত্রে ‘না’ ভোট থাকবে। যদি ‘না’ ভোট বেশি হয় তাহলে ফের নির্বাচন হবে। পরের নির্বাচনেও যদি একক প্রার্থী থাকে, তবে আর ভোট হবে না। ওই প্রার্থীই নির্বাচিত হবেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে সংশোধন আনতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।

হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে বাতিল হবে এমপি পদ : নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, কোনো প্রার্থী হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে ভোটের পরেও তদন্ত করবে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে সত্যতা মিললে বাতিল হবে প্রার্থিতা, চলে যাবে সংসদ সদস্য (এমপি) পদ। তিনি বলেন, হলফনামায় যদি কেউ মিথ্যাচার করে, হলফনামায় যদি মিথ্যা তথ্য দেয়, তাহলে সেটার ব্যাপারে তদন্ত করে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আরও সুনির্দিষ্টভাবে বিধান আরপিওতে সন্নিবেশ করা হয়েছে। এ সময়কালটা হবে যে অফিসের জন্য উনি নির্বাচনটা করছেন সেই অফিসের মেয়াদকাল (এমপি পদের মেয়াদ) পর্যন্ত। এরপরে স্বাভাবিকভাবে ফৌজদারি মামলা অন্যভাবে হতে পারে।

ইসির বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরে আবুল ফজল জানান, কমিশন অন্যান্য বাহিনীর মতো সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের আইনশৃঙ্খলায় নামাতে পারবে। বর্তমান ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর ইভিএম ব্যবহার করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল। এখন আরপিও থেকে তা বাদ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ইভিএম ব্যবহার হবে না। তাই যাবতীয় বিধান বিলোপ করা হয়েছে আরপিও সংস্কারের প্রস্তাবে। নির্বাচন কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার শাস্তি সুস্পষ্ট করা হয়েছে। তিন কর্ম দিবসের তদন্ত ও ব্যবস্থা ইসিকে জানাতে হবে তিন দিনের মধ্যে। তিনি বলেন, সরকারের সায় পেলে আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি হবে। সেই সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের কোনো সুপারিশ থাকলে তা পরে যুক্ত করা হবে।

আরো কয়েকটি সিদ্ধান্ত : . একটি বিষয় যেটা আচরণবিধিতে যোগ হবে দল এবং প্রার্থী প্রার্থীদের সেটা হচ্ছে নারীর প্রতি সম্মান নিশ্চিতের লক্ষ্যে যথাযথ কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ২. সংবাদকর্মীদের (পোস্টাল ব্যালটে) ভোট বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে মতামত নিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে বসবে। ৩. নিবন্ধনে আগ্রহী ২২ দলের মাঠ পর্যায়ের অফিসকমিটি যাচাইয়ের তদন্তের সিদ্ধান্ত। ৪. ৮২টি আসনের বিষয়ে দাবিআপত্তি আবেদন পেয়েছে নির্বাচন কমিশন, যা নিয়ে শুনানি করবে ইসি। ৫. নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে ইসি। ১৮ আগস্ট এ প্রাথমিক কর্মপরিকল্পনা হালনাগাদ করে উপস্থাপন করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবন্দরের কাছে চসিকের পাওনা নির্ধারণে হবে যৌথ সার্ভে
পরবর্তী নিবন্ধকুয়ালালামপুরে প্রধান উপদেষ্টাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা