বিনা টিকেটে ট্রেনে ভ্রমণের মূল্য পরিশোধ ষাটোর্ধ্ব এমদাদুলের

| বুধবার , ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৩:৪৩ পূর্বাহ্ণ

বিনা টিকেটে যতবার ট্রেনে ভ্রমণ করেছেন হিসাব করে তার সব মূল্য রেলওয়েকে পরিশোধ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মৌড়াইল এলাকার বাসিন্দা এমদাদুল হক দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) কনস্টেবল পদে চাকরি করতেন। গত বছর তিনি অবসরে যান। খবর বিডিনিউজের।
গত সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে তিনি বিনা টিকেটে ট্রেনে ভ্রমণের জন্য সমুদয় অর্থ পরিশোধ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী কবির হোসেন বলেন, এমদাদুল হক টিকিট কাউন্টারে এসে বলেন, তিনি বিভিন্ন সময় টিকিট ছাড়াই ট্রেনে ভ্রমণ করেছিলেন এবং তার কাছে হিসাবও আছে। হিসাব অনুযায়ী, তিনি দুই হাজার ৫৩০ টাকা টিকিট বা ভাড়া বাবদ রেলওয়েকে দিতে চান। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত মহানগর প্রভাতী ট্রেনের দুই হাজার ৫৩০ টাকা সমমূল্যের আসনবিহীন কয়েকটি টিকিট ইস্যু করে দেওয়া হয় এমদাদুল হককে। প্রধান বুকিং সহকারী আরও বলেন, এমদাদুল হক একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। নানা কারণে হয়তো তিনি ট্রেনে চড়ার সময় টিকেট কাটতে পারেননি। কিন্তু তিনি সেই টাকা স্বেচ্ছায় পরিশোধ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে এমদাদুল হক বলেন, চাকরির কারণে ঢাকায় থাকতে হতো। মাঝে মাঝে ট্রেনে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরিবারের কাছে আসতাম। নানা কারণেই হয়তো অনেক সময় টিকেট কাটতে পরিনি। কিন্তু সেসব আমি হিসাব রাখতাম। আমার কোনো পূণ্যই এই দেনার (বিনা টিকিটে ভ্রমণ) শোধ হবে না। তাই টিকিটের টাকা পরিশোধ করেছি। এটি করে মানসিকভাবে শান্তি পাচ্ছি। বিনা টিকেটে ট্রেনে ভ্রমণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ, সেটি জেনেও কেন এমন করেছিলেন- এর উত্তরে এমদাদুল হক বলেন, স্টেশনে এসে দেখতাম ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছে, দৌড়ে গিয়ে উঠতাম। টিকেট কাটার সুযোগ হতো না। ট্রেনে উঠার পর হয়তো হাতের কাছে টিটিকে পেতাম না, ফলে টিকেট কাটা হতো না। এখন সব টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। এমদাদুল হক জেলার নবীনগর উপজেলার কনিকাড়া গ্রামের শামসুল হকের ছেলে। পরিবার নিয়ে তিনি এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরেই অবসর জীবন কাটাচ্ছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচমেক হাসপাতাল
পরবর্তী নিবন্ধপথসভায় বক্তারা