বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী

| সোমবার , ৮ মার্চ, ২০২১ at ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ

পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদলের হিড়িকের মধ্যে এবার কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) নাম লেখালেন বলিউড ও টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। রোববার কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমাবেশের মঞ্চে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেন বলে আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির দায়িত্বে থাকা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দলে মিঠুনকে স্বাগত জানিয়ে তার হাতে দলের পতাকা তুলে দেন । ৭০ বছর বয়সী মিঠুন পশ্চিমবঙ্গে বেশ জনপ্রিয়। তার ২০০৬ সালের চলচ্চিত্র ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট’-র ‘মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে’ সংলাপ এখনও অনেকের মুখে মুখে ফেরে। পশ্চিমবঙ্গে আগামী ২৭ মার্চ থেকে বিধানসভা নির্বাচন শুরু হতে যাচ্ছে; ৮ ধাপে ২৯৪টি আসনের নির্বাচন শেষ হবে ২৯ এপ্রিল। ফল মিলবে ২ মে। খবর বিডিনিউজের। নির্বাচন শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে মিঠুনকে দলে ভিড়িয়ে বিজেপি বেশ বড়সড় চমক দেখাল; তবে দলে তার অবস্থান কোথায় হবে, কিংবা তাকে বিধানসভা বা অন্য কোথাও প্রার্থী করা হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। এনডিটিভি জানায়, বিজেপি নেতা বিজয়বর্গীয় শনিবার মিঠুনের বেলগাছিয়ার বাড়ি গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন; এরপর থেকেই জনপ্রিয় এ বাঙালি অভিনেতার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। ‘তার (মিঠুন চক্রবর্তী) সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে। আজ তিনি (ব্রিগেড ময়দানে) আসছেন। তার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার পর আমি আরও কিছু বলতে পারবো,’ রোববার এমনটাই বলেন বিজয়বর্গীয়।
তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য হিসেবে ২০১৪ সালে রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন মিঠুন। সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় দুই বছর পরই তিনি সেখান থেকে পদত্যাগ করেন। অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া মিঠুন সারদার অর্থায়নে হওয়া একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ হিসেবে এক কোটি ২০ লাখ রুপি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছিলেন। পরে তিনি তদন্তকারী সংস্থাকে ওই অর্থ ফিরিয়ে দেন এবং অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করেন। রোববার বিজেপিতে যোগ দিয়ে মিঠুন বলেন, ‘আমি বাঙালি। আমি গর্বিত আমি বাঙালি। ভুলে যাবেন না দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের ১৫০ তম বছর এটা। ভুলে যাবেন না রানি রাসমণিকে, এরাই আসল বাঙালি। বাংলার সব কিছুতে অধিকার আপনাদের। কেউ তা ছিনিয়ে নিতে এলে, আমাদের মতো কিছু লোক দাঁড়িয়ে যাবে। মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে শুনেছেন আগেই। এ বার নতুন কথা শুনুন, আমার নাম মিঠুন চক্রবর্তী। আমি যা বলি, তা করে দেখাই। আমি জলঢোড়াও নয়, বেলোবোড়াও নই। আমি একটা কোবরা। আমি জাত গোখরো।’ মিঠুন তার প্রতি ভরসা রাখতে পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের প্রতি আহ্বানও জানান। ‘দাদার প্রতি ভরসা রাখবেন। বিশ্বাস রাখুন। দাদা কখনও ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়নি। এক ছোবলে ছবি। কেউ পালাতে পারবে না,’ বলেন তিনি। ব্রিগেড়ে মোদীর এ সমাবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কলকাতাজুড়ে দেড় হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি; সমাবেশস্থলের চারপাশে থাকছে ড্রোন ক্যামেরাও।
বিজেপি এখন পর্যন্ত ৫৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল ২৯১টি আসনে প্রার্থী দিয়ে দিয়েছে; ৩টি আসন ছেড়েছে মিত্র দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে।
২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি মাত্র ৩টি আসন জিতেছিল; অবশ্য ৩ বছর পর লোকসভা নির্বাচনে তারা রাজ্যের ৪২টি আসনের ১৮টিই কব্জা করে সবাইকে চমকে দেয়। সেবার তৃণমূল জিতেছিল ২২টি আসনে, কংগ্রেস দুটি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপদ্মার চরে তারা
পরবর্তী নিবন্ধশমীর অব্যাহতি