চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির জরুরি সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে যেতে কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, চসিক নির্বাচনে বিদ্রোহীদেরকে অবশ্যই সরে দাঁড়াতে হবে অন্যথায় বহিষ্কার করা হবে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদেরকে যে কোনোভাবে বসাতে হবে। আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে ডেকে বসতে হবে। যদি না বসে মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে তাদেরকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠালে কেন্দ্র থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করা হবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জয়ী হতে হবে। গতকাল শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরীর বহদ্দারহাটস্থ বাসভবনে চসিক নির্বাচন নিয়ে জরুরি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে আওয়ামী লীগের এই দুই শীর্ষ নেতা এসব কথা বলেন।
যেকোনো প্রকারে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সাথে বসতে হবে উল্লেখ করে প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি আরো বলেন, কাউন্সিলর পদে দল থেকে যাদেরকে মনোনয়ন দিয়েছে শুধুমাত্র তারাই নির্বাচন করতে পারবেন। বিদ্রোহী প্রার্থীদের বসিয়ে দিতে হবে। ভোটের জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে যেতে হবে। যাদেরকে পোলিং এজেন্ট দেয়া হবে-তাদেরকে যেন যাচাই-বাছাই করে দেয়া হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেন, ভোট কেন্দ্রে যাদেরকে এজেন্ট দেয়া হবে তাদেরকে ইভিএম সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কেন্দ্র কমিটিতে যারা দায়িত্ব পালন করবেন তাদেরকে ১০টি করে ভোট কেন্দ্রে আনার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে হবে। দলের প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদেরকে দায়িত্ব নিতে হবে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেন, আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি আমাদের প্রার্থী রেজাউল ভাইকে (রেজাউল করিম চৌধুরী) জয়ী করার জন্য আমার পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার আমি সবই করবো। ২৭ তারিখ (২৭ জানুয়ারি) এর প্রমাণ পাবেন। রেজাউল ভাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী। রেজাউল ভাইয়ের জয় মানে-শেখ হাসিনার জয়।
তিনি আরো বলেন, এখন যেহতু প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই, সেক্ষেত্রে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ ভাইয়ের সাথে বসে তাদেরকে নিবৃত করার চেষ্টা করব। আর নতুন যে চারটি ওয়ার্ডে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে প্রার্থী মনোনয়নে আমরা কেন্দ্রকে মতামত জানাব।
মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন এবং আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরী। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু।
সভায় উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, নঈম উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সুনীল সরকার, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আলম মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, শফিকুল ইসলাম ফারুক, সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, হাজী জহুর আহমদ, ইঞ্জিনিয়ার মানস রক্ষিত, জোবাইরা নার্গিস খান, দিদারুল আলম চৌধুরী, আবদুল আহাদ, মোহাম্মদ আবু তাহের, মোঃ শহিদুল আলম, বখতিয়ার উদ্দিন খান, গোলাম মোঃ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম বাহাদুর, রোটারিয়ান হাজী মোঃ ইলিয়াছ, নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, মোঃ জাবেদ, হাজী বেলাল আহমেদ, মোঃ মোরশেদ আকতার চৌধুরী।
বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে সকলেই রাতের খাবারে অংশ গ্রহণ করেন।