বাংলাদেশে দূতাবাস নেই–এমন দেশে যেতে সনদ সত্যায়নের জন্য দিল্লি যাওয়ার যে ভোগান্তি এতদিন চলছিল, তা লাঘবের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘এপসটিল কনভেনশন–১৯৬১’ নামের একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, যার ফলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়নের মাধ্যমেই প্রয়োজনীয় সনদগুলো বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
সাধারণত বিদেশে যাওয়ার সময় শিক্ষা সনদ, বৈবাহিক সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যন্য প্রয়োজনীয় সনদগুলো সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের মাধ্যমে ভেরিফিকেশন বা সত্যায়ন করে নিতে হয়। ঢাকায় যেসব দেশের দূতাবাস নেই, সেসব দেশের ক্ষেত্রে কাছাকাছি কোনো দেশে থাকা দূতাবাসে গিয়ে এই ভেরিফিকেশনের কাজটি সারতে হয়। এখন কনভেনশনে স্বাক্ষর করা হলে ঢাকায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভেরিফিকেশনই যথেষ্ট হবে। গতকাল বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নিজ মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানান, আন্তর্জাতিক এই কনভেনশনে স্বাক্ষর সম্পাদন হলে বিদেশগামী শিক্ষার্থী ও মানুষের বিভিন্ন সনদ, দলিল, হলফনামায় নিজ দেশের যথাযথ সত্যায়ন থাকলে অন্য দেশে গিয়ে পুনরায় সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না এবং এর ফলে দেশের মানুষের বছরে সাশ্রয় হবে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
মন্ত্রী বলেন, এই প্রস্তাবটি সোমবার মন্ত্রিসভায় পাশ হয়েছে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সিদ্ধান্ত আজ (গতকাল) মন্ত্রিসভা দিয়েছে। এটি কার্যকর হলে শিক্ষার্থী, অভিবাসী, কর্মী, পারিবারিক পুণর্মিলন প্রত্যাশীসহ বিদেশগামী সকলের যে নানা ডকুমেন্ট এ দেশে এবং বিদেশের দূতাবাসসহ নানা দপ্তরে সত্যায়নের প্রয়োজন হয়, সেটি শুধু এ দেশে সত্যায়ন করলেই হবে।
ড. হাছান মাহমুদ ব্যাখ্যা করে বলেন, বাংলাদেশে সব দেশের দূতাবাস নেই। ৯০টি দেশের দূতাবাস রয়েছে দিল্লিতে। সেখান থেকে সত্যায়ন করে আনতে আবার ভারতের ভিসা লাগে। এ সবের জন্য যে অর্থ, সময় ও পরিশ্রম ব্যয় হয়, এই কনভেনশনে যুক্ত হলে তা বেঁচে যাবে, বছরে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
এটি কার্যকর হতে প্রায় ৬ মাস লাগবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এপোস্টল কনভেনশনে যুক্ত হতে এর ১২৬টি সদস্য রাষ্ট্রকে অবহিত করতে হয়, কিছু আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে।