বিএসটিআইয়ের পূর্ণাঙ্গ ল্যাব নির্মিত হয়নি এখনো

অধিকাংশের পরীক্ষা ঢাকার ওপর নির্ভরশীল

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

দেশের একমাত্র মান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউটের (বিএসটিআই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে এখনো নির্মিত হয়নি পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষাগার (ল্যাব)। ফলে অধিকাংশ পণ্যের পরীক্ষার জন্য ঢাকার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এতে একদিকে ব্যবসায়ীদের সময়ক্ষেপণ এবং অন্যদিকে অর্থেরও অপচয় হচ্ছে।
বিএসটিআইয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার আমদানিকৃত ও উৎপাদিত পণ্যের মান পরীক্ষা হয় এই ল্যাব থেকেই। অন্যদিকে আমদানি নীতিতে তালিকাভুক্ত ৭৯টি পণ্য বন্দর থেকে খালাসে বিএসটিআই থেকে আমদানিকারকদের সনদ নিতে হয়। বিএসটিআইয়ের ল্যাবে উন্নত যন্ত্রপাতি এবং রাসায়নিক পরীক্ষকের সংকটে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ঢাকার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম বিএসটিআইয়ের মান নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের ‘মান’ প্রশ্ন নিয়ে তুলছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, গত ২০১৫ সালে বিএসটিআইয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে ১০তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ওই ভবনে একটি পূর্ণাঙ্গ অত্যাধুনিক ল্যাব নির্মাণেরও উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রকল্পের ৭ বছরের মাথায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ ফেলে চলে যাওয়ায় বিএসটিআইয়ের আধুনিক ল্যাবের উদ্যোগটিও মুখ থুবড়ে পড়েছে।
বিএসটিআই চট্টগ্রাম বিভাগীয় অফিস সূত্রে জানা যায়, বিএসটিআই দেশে উৎপাদিত শিল্পপণ্য, বৈদ্যুতিক ও প্রকৌশল পণ্য, খাদ্য ও কৃষিজাত পণ্যসহ মোট ২২৯টি পণ্য নজরদারি করে। এসব পণ্যের মধ্যে চট্টগ্রামে ল্যাবে রাসায়নিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা যাচ্ছে ৯৫টি পণ্যের। এছাড়া ফিজিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন করা যাচ্ছে ২২টি পণ্যের। তবে পানি, গুড়ো দুধের মেলামিন, ফায়ার এঙটিংগুইসারের মান, ত্বকের বিভিন্ন প্রসাধনী, ইলেকট্রিক মিটারের মান, লিখা এবং ছাপাখানার কাগজ পরীক্ষা এবং শিশু খাদ্যের পরীক্ষাও ঢাকার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তবে বর্তমানে নির্মাণ সামগ্রী টাইলস, সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেল, কলম, সস, জুস, টুথপেস্ট, শ্যাম্পু, পেনসিল এবং চকলেট জাতীয় পণ্যের পরীক্ষা চট্টগ্রাম ল্যাবে সম্পন্ন হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিএসটিআইয়ের ল্যাবে সব ধরণের পণ্য পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। আমদানি নীতিতে তালিকাভুক্ত অনেক পণ্যের পরীক্ষার জন্য ঢাকার ওপর নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে। ফলে বিএসটিআই সনদ পেতেও ভোগান্তি পড়তে হচ্ছে। একইসাথে আমদাকিারকদের সময়ক্ষেপণের পাশাপাশি লোকসানও গুনতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানি রিগ্যান দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম বিএসটিআইয়ে অনেক পণ্যের পরীক্ষায় আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে কাগজ ও কলমজাতীয় পণ্য ছাড় করতে হলে বিএসটিআইয়ের সনদ নিতে হয়। এখন পণ্যের নমুনা ঢাকায় পাঠানোর কারণে আমাদের ৫ থেকে ৭দিন পর্যন্ত সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। এছাড়া অর্থের অপচয় তো আছেই।
বিএসটিআই চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএসটিআই কার্যালয়ে ১০ তলার ভবন তৈরির প্রকল্প নেয় সরকার। ওই ভবনের তৃতীয় তলার আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ একটি পূর্ণাঙ্গ ল্যাব তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু প্রকল্পের মাঝপথে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ না করার কারণে ল্যাবের তৈরির বিষয়টিও আটকে গেল। তারপরেও আমাদের এখানে বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক পণ্যের মধ্যে ৫০ শতাংশেরও বেশি পরীক্ষা চট্টগ্রামে হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন
পরবর্তী নিবন্ধভারতের সাথে মৈত্রী রক্তের বন্ধন : তথ্যমন্ত্রী