সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে সপ্তম দফায় আজ থেকে আবার ৪৮ ঘণ্টা অবরোধ ডেকেছে বিএনপি। শুক্র ও শনিবার ছুটির দুদিন বিরতি দিয়ে আজ রোববার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত সারা দেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে অবরোধ করবে দলটি। ষষ্ঠ দফায় ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষ হওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রাত পোহালেই যে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু হতে যাচ্ছে। সেই সপ্তম দফার অবরোধে নেতাকর্মীদের মধ্যে দুর্জয় সাহস দেখাতে হবে। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেছেন, আগামীকাল (আজ) থেকে শুরু হবে আবারও নিরবচ্ছিন্ন ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি। গণতন্ত্র ফেরানো, আজকে অন্যায়ভাবে গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলা মানুষজনকে কারাবন্দি করা এবং তাদের মুক্ত করার যে কর্মসূচি, জনগণের মালিকানা ফেরত দেওয়ার যে কর্মসূচি, সেটা হচ্ছে এই অবরোধ কর্মসূচি।
২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের দিন বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে হরতাল ও অবরোধের মতো কর্মসূচি দিয়ে আসছে বিএনপি। তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামী এবং সমমনা দলগুলোও একই কর্মসূচি দিচ্ছে আলাদা আলাদাভাবে। এর মধ্যে ছয় দফায় ১৩ দিন অবরোধ এবং দুই দফায় তিন দিন হরতাল করেছে দলগুলো। সপ্তাহের দুই ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার ছাড়াও তিনটি মঙ্গলবার কর্মসূচিতে বিরতি দেওয়া হয়। এসব কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বা পিকেটিং সেভাবে চোখে পড়ছে না। মাঝেমধ্যে সকালের দিকে রিজভীর নেতৃত্বে ঝটিকা মিছিল হচ্ছে কয়েক মিনিটের জন্য। ২০–৩০ জন নেতাকর্মী তাতে অংশ নিচ্ছেন।
২৮ অক্টোবরের সংঘাতের পর দায়ের করা তিন ডজন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকেই কারাগারে রয়েছে। বাকিরাও অনেকে আত্মগোপনে থাকছেন। ভার্চুয়াল ব্রিফিং করে দলের কর্মসূচি জানাচ্ছেন রিজভী।
নির্বাচন এলে আগে দেশজুড়ে আনন্দ–উৎসবের জোয়ার নামত উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এখন তার পরিবর্তে সারা দেশে ভয়ার্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। যারা আওয়ামী লীগ করে তারা ছাড়া সবাই গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বহু গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। মনোনয়ন নিয়ে ইতিমধ্যে খুনোখুনি শুরু করেছে তারা (আওয়ামী লীগ)। নির্বাচনকে সরকার উৎসবের বদলে ভয়, আতঙ্ক ও শোকে পরিণত করেছে।
বিএনপির নেতাদের ‘সাজা দেওয়ার হিড়িক পড়েছে’ অভিযোগ করে তিনি বলেন, গত একদিনে সারা দেশে বিএনপির ৩২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।