ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি দিয়ে সহিংসতা করায় বিএনপির ওপর মার্কিন ভিসা নীতি প্রয়োগ করা উচিত বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সচিবালয়ে গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি বলেছেন, পথ অবরোধ করবে, ঢাকার প্রবেশপথ, এটা কোন রাজনীতি? এটা কোন গণতন্ত্র? এটা কেন? নির্বাচনকে সামনে রেখে এ কর্মসূচি যারা নেয়, ভিসা নীতি তো তাদের ওপর কার্যকর হওয়া উচিত। এটা স্পষ্ট নির্বাচনকে বাধা দেওয়া।
শনিবারের ওই কর্মসূচিতে সহিংসতার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে আওয়ামী লীগ বলছে, আবারও আগুন সন্ত্রাসে ফিরে গেছে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়া দলটি। বিএনপির কর্মসূচির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সমাবেশ করলাম দক্ষিণ গেইটে, তারা করল নয়া পল্টনে। ঠিক পরের দিন ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান, এটা কোন কর্মসূচি? আমরা তো এ ধরনের কোনো কর্মসূচি কখনো নিইনি। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, তাদের উদ্দেশ্য হলো তারা একটা লাশ ফেলবে। তারেক জিয়া লন্ডন থেকে ভিডিওতে বলেছে একটা লাশ ফেললে ১০টা লাশ ফেলতে হবে। কি অ্যাটিচিউড! কি ভয়াল তাদের অ্যাটিচিউড! পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশ তো বাধা দেবেই। ঢাকা–চট্টগ্রামের প্রবেশপথের রাস্তা বন্ধ করে দেবে, পুলিশ চুপ করে থাকবে? আমি পুলিশের দোষ দেব না, পুলিশের এটা দায়িত্ব মানুষের জানমাল রক্ষা করা।
বিএনপি নেতারা দলের কর্মীদের ‘অতিরিক্ত জামা–কাপড় নিয়ে’ ঢাকা আসতে বলেছিলেন দাবি করে কাদের বলেন, বেচারারা জামা–কাপড় নিয়ে থাকতে তো পারল না, ফিরে গেল। টাকাও শেষ, দুই হাজার টাকা করে দিয়েছিল। আমরা তো জনগণের অসুবিধা করে কিছু করছি না। যারা এগুলো করছে তাদের ওপর তো আজকেই ভিসা নীতি প্রয়োগ করা উচিত ছিল। তারা ভিসা নীতির কথা বলে! আর কি বাকি থাকতে পারে? হাইওয়েগুলো বন্ধ করে দিল, প্রবেশপথে নেতাকর্মীরা বসে যাবে।
দু্ই দলের চাওয়াই এক : বিএনপির মূল দাবির সঙ্গে কেউ নেই মন্তব্য করে কাদের বলেন, তাদের দাবি আমাদের দাবি এক, ইলেকশন, শান্তিপূর্ণ ইলেকশন। এ শান্তিপূর্ণ ইলেকশন আমরা বাধাভুক্ত করব কোন স্বার্থে? আমাদের তো ক্ষতি, লাভ নেই। ইলেকশন শান্তিপূর্ণ না হলে, আমাদের কারণে না হলে আমরা দায়ী হব আর অন্য কারণে না হলে সেজন্য তারা (বিএনপি) দায়ী।
বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে এক প্রশ্নে কাদের বলেন, আমরা কোনো উত্তেজনায় যাব না। আমরা নির্বাচন চাই। উত্তেজিত হলে তো আমাদের চলবে না, আমরা সরকারি দল। তারা যে কোনো মূল্যে, যে কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতা থেকে শেখ হাসিনাকে হটাতে চায়, এটা তাদের টার্গেট। আমরা নির্বাচন চাই। নির্বাচনে জনগণ চাইলে থাকব আবারো, জনগণ না চাইলে আমরা বিদায় নেব।
নির্বাচন পর্যন্ত ছাড়াছাড়ি নেই : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগ মাঠে থাকবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। বিএনপির কর্মসূচির দিন পাল্টা কর্মসূচি দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, আজকে (সোমবার) তো আমাদের কোনো কর্মসূচি নেই। নির্বাচন পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত আছে। তবে কর্মসূচির ধরনটা পাল্টাবে। কাল থেকে শোকের মাস। শোকের মাসের কর্মসূচির ধরন ভিন্ন হবে, কর্মসূচিকে ঢেলে সাজাচ্ছি। কর্মসূচি আমরা ছেড়ে দিইনি। এটা তো একবার ঘোষণা হয়ে গেছে। নির্বাচন পর্যন্ত ছাড়াছাড়ি নেই, আমরা আছি মাঠে, সতর্ক অবস্থানে আছি। আজকেই সতর্ক অবস্থানে আছি। আমরা রাস্তায় যাওয়া মানেই সংঘাত। এটা পুলিশের কাজ, পুলিশ করবে। রাস্তা বন্ধ করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কিছু পশ্চিমা দেশের কূটনীতির সাম্প্রতিক বিবৃতিরও সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের।
গয়েশ্বর কেন খেয়েছেন : ঢাকার প্রবেশমুখে বিএনপির অবস্থান থেকে আটক গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে খাওয়ানোর পর সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়ায় দোষের কিছু দেখছেন না ওবায়দুল কাদের। তার ভাষায়, গোয়েন্দাদের কাজই এ রকম। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে গিয়ে ‘কেন খেলেন’, উল্টো সেই প্রশ্ন তুলেছেন কাদের।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গতকাল তিনি বলেন, উনি কেন খাইলেন এটা জিজ্ঞেস করেন। এত ক্ষুধা রাজনীতিক নেতার? কিসের রাজনীতিক? তিন দিনও খাইনি আমরা একসাথে।









