রামগঞ্জ, রাজবাড়ী ও নাটোরে গতকাল বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন হামলা ও ভাঙচুরের জন্য আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দায়ী। খবর বাংলানিউজ ও বিডিনিউজের।
গতকাল শনিবার বিকেল ৩টার দিকে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌর ৫ নম্বর ওয়ার্ড সাতারপাড়া চৌরাস্তায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক সাংবাদিকসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় অন্তত ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৬ থেকে ৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে। আহতরা রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বিএনপি নেতা ড. মামুন আহম্মেদ ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ–সভাপতি ইমাম হোসেন জানান, আগে থেকেই অবস্থান নেয়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ইট–পাটকেল ও কাঁচের বোতল নিক্ষেপ করে। সেখানে পুলিশ সদস্যরাও ছিল। তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা পাল্টা ইট–পাটকেল ছুঁড়লে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। উপজেলা যুবলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া সুমন বলেন, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত শান্তি সমাবেশ ছিল। বিএনপির নৈরাজ্য ঠেকাতে আমরা সমাবেশ ডাকি। তারা নৈরাজ্যের চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তা প্রতিহত করে।
রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়া নেতা–কর্মীদের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বিকালে জেলা শহরের সজ্জনকান্দায় নিজের বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন রাজবাড়ী–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম। এতে স্থানীয় দুই সাংবাদিকসহ বিএনপির কয়েকজন নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার নিন্দা ও জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান সাবেক এ সংসদ সদস্য। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিএনপির অভিযোগ মিথ্যা। তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে। এখানে যুবলীগ বা ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখায়রুজ্জামান বলেন, পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে কারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত তা এখনও জানা যায়নি। এখনও কোনো অভিযোগ আসে নাই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে নাটোরে গতকাল দুপুর ২টার দিকে শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সামনে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এ সময় আহত এক নেতাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র–শস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করার অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।
হামলার বিষয়ে বিএনপির অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্ত্তজা আলী বাবলু।
নাটোর সদর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ বলেন, পুলিশ আগে থেকেই আলাইপুর এলাকায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছিল। উভয় পক্ষকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেছে। আমাদের সামনে কেউ আহত হয়নি। অন্য কোথায় বিচ্ছিন্ন ঘটনায় আহত হতে পারে।