বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ সংবিধানে পুনর্বহাল করবে

আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত সম্মেলনে সালাহউদ্দিন

| রবিবার , ১৬ নভেম্বর, ২০২৫ at ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ সংবিধানে পুনর্বহাল করবে বলেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকায় এক সমাবেশে তিনি বলেন, আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে প্রথমবারের মতো ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করেছিলেন, সেটা বহাল আছে। অনেকেই এটা সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলপারে নাই। কিন্তু যেটা বহাল নাইরাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে আমরা যেটা সংযোজন করেছিলাম, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, ‘মহান আল্লাহর উপরে আস্থা এবং বিশ্বাস’সংবিধানের প্রস্তাবনায় ছিল এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে ছিল আর্টিকেল ৮ এর মধ্যে। সেটা তুলে নেওয়া হয়েছে আপনারা জানেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটিরি এই সদস্য সমবেতদের কাছে জানতে চান বিএনপি সেটি পুনর্বহাল করবে কি না? খতমে নবুয়তের নেতাকর্মীরা সমস্বরে ‘হ্যা’ সূচক জবাব দিলে সালাহউদ্দিন বলেন, ইনশাল্লাহ যেটা আমরা পুনর্বহাল করব। খবর বিডিনিউজের।

খতমে নবুয়তের দাবির প্রসঙ্গ ধরে তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ, যদি বাংলাদেশের সরকার পরিচালনার দায়িত্ব আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে দেয়, যদি এদেশের জনগণ আমাদেরকে মহব্বত করে দায়িত্ব দেয়, যদি আপনারা সবাই সহযোগিতা করেন, এই মঞ্চে উপবিষ্ট রাজনৈতিক নেতারা, পীরে কামেল, হয়রতে উলামায়ে কেরাম, আমাদের দেশের বুজুর্গানে দ্বীন, যারা আমাদেরকে পরিচালিত করেন, সবাই যদি আপনারা সহযোগিতা করেন, একসাথে থাকেন তাহলে আজকে যে সমস্ত দাবি দেওয়া হয়েছে সকল দাবিদাওয়া বা প্রস্তাবের পক্ষে আইনি ব্যবস্থা জাতীয় সংসদে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে। এজন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, জাতীয় সংসদে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, সারা বাংলাদেশের মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা ইনশাআল্লাহ আপনাদের এই প্রস্তাব গ্রহণ করব।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা মুসলমান, আমরা ‘লা ইলাহা ইল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলাল্লাহতে’ বিশ্বাস করি। রসুলুল্লাহ মুহাম্মদ (সা.) বলে গিয়েছেন, আমিই আখেরি নবী, আমার পরে কোনো রসুল আসবে না, কোনো নবী আসবে না। যদি কেউ পরে দাবি করে থাকেন, নিজেকে নবী ঘোষণা করে থাকেন তাহলে তিনি রসুলাল্লাহ (সা.) এই বাণীর মধ্যে নাই। আমরা রসুলকে আখেরি নবী হিসেবে বিশ্বাস করে, কলেমা পড়ে আমরা মুসলমান হয়েছি। বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমরা এদেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশি পরিচয়ে বিশ্বাস করি। আর যারা রসুলল্লাহর (সা.) পক্ষে নয়, তারা মুসলমান হতে পারে না।

খতমে নবুওয়ত পরিষদের উদ্যোগে এই আন্তর্জাতিক মহাসম্মেলন হয়। কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে এই মহাসম্মেলনটি সকাল ৯টায় শুরু হয়ে বেলা ২টা পর্যন্ত চলে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, সৌদি আরব, মিশর থেকে আসা আলেমউলামারা ও ইসলামী চিন্তাবিদরা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পাকিস্তানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি ফজলুর রহমান।

খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটির আমির মধুপুরের পীর আল্লামা আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভারতের জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানি, পাকিস্তানের বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব হানিফ জালন্দরি এবং মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুসআব নাবীল ইবরাহিম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মহিবুল্লাহ বাবুনগরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি উবায়দুল্লাহ ফারুক, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুহাম্মদ আবদুল মালেক, হেফাজতে ইসলামের নজিবুল হাসান কাশেমী, মাহবুবুল হক, জুনায়েদ আল হাবিব, আবদুর রব ইউসুফী, পীর মাওলানা খলিলুর রহমান নেসারাবাদী, মাওলানা নুরুল হক, পীর শফিকুল হক, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে আজীবন গ্রেপ্তার ও বিচার থেকে দায়মুক্তি
পরবর্তী নিবন্ধরিয়া মনির মামলায় হিরো আলম গ্রেপ্তার, ২০০ টাকা মুচলেকায় জামিন