বিএনপি ও আ. লীগ নেতাসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সোনাদিয়া দ্বীপে প্যারাবন ধ্বংস করে চিংড়িঘের নির্মাণ

মহেশখালী প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২০ মে, ২০২৫ at ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ

মহেশখালীর সোনাদিয়া দ্বীপের প্যারাবন ধ্বংস করে চিংড়িঘের নির্মাণ ও আগুন দিয়ে গাছপালাজীববৈচিত্র্য ধ্বংসের অভিযোগে স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। মামলায় অধিকাংশ আসামি নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মী। গত রোববার বিকেলে মহেশখালী থানায় পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সিনিয়র কেমিস্ট মো. আবদুচ ছালাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলার ২০জন আসামিরা হলেন, মহেশখালীর কুতুবজোম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী (৩৭), কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. শেখ কামাল (৪০) ও তার ছোট ভাই শেখ আলমগীর (৩০), কুতুবজোম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম (৫০) ও তার ভাগিনা আবদুল মোনাফ (৩০), স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইমতিয়াজ উদ্দিন (৩২), আওয়ামী লীগের সদস্য আজিজুল হক (৩৮), সোনাদিয়া দ্বীপের ইউপি সদস্য একরাম মিয়া (৩০), মোহাম্মদ শফিউল আলম (৩৮), জাহাঙ্গীর বাদশাহ (৪০), মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর (৩২), মোহাম্মদ নকিব (৩০), মোহাম্মদ শফি (৪২), নুরুল আফছার (৫০), নুর হোসেন (৫০), আবু তাহের (৪৫), মোহাম্মদ হোসেন (৫৫), কঙবাজার২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিকের ফুপাতো ভাই মোহাম্মদ শমসের উল্লাহ (৩৫), ঘটিভাঙা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক (৪০) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা আনোয়ার (৪৫)। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২৫৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কাইছার হামিদ বলেন, রোববার বিকেলে সোনাদিয়া দ্বীপে প্যারাবন ধ্বংস করে চিংড়িঘের নির্মাণের অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তর ২০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। পরিবেশ আইন ২০১০ অনুসারে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের। থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু করার পর পরবর্তী সময়ে মামলাটি তদন্তের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে পাঠানো হবে।

এ প্রসঙ্গে মামলার ২ নম্বর আসামি ও ইউপি চেয়ারম্যান শেখ কামাল বলেন, আমার নামে সোনাদিয়ায় কোনো চিংড়িঘের নেই। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে সোনাদিয়ার প্যারাবন নিধন করে চিংড়িঘের নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। মামলার প্রধান আসামি ও বিএনপি নেতা আলমগীর চৌধুরী বলেন, আমি প্রতিহিংসার শিকার। বাবার কেনা একটি চিংড়িঘের ছাড়া সোনাদিয়ায় কোনো চিংড়িঘের নেই।

মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন (ইসিএ) এলাকা প্রাকৃতিক প্যারাবন ধ্বংস, বাঁধ নির্মাণ, চিংড়িঘের ও লবণ মাঠ তৈরি, প্রাণী, উদ্ভিদ ও জলজ প্রাণীর ক্ষতিকারক কার্যাবলি, ভূমি ও পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে আসামিরা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

পরিবেশ অধিদপ্তর কঙবাজারের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. জমির উদ্দিন বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলার তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। প্যারাবন দখল করে চিংড়িঘের নির্মাণের সঙ্গে জড়িত কাউকে পাওয়া গেলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজিয়া স্মৃতি জাদুঘর হবে পূর্ণাঙ্গ মিউজিয়াম
পরবর্তী নিবন্ধলুটেরাদের জব্দ টাকায় তহবিল হবে, ব্যয় হবে জনকল্যাণে : গভর্নর