বায়েজিদ থানার সাবেক ওসি কামরুজ্জামানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ‘পুলিশের গুলিতে এক পা হারানো’ নগর ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলামের মা ছেনোয়ারা বেগম গতকাল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলি উল্লাহর আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।
আসামিরা হলেন বায়েজিদ থানার সাবেক ওসি কামরুজ্জামান, থানার এসআই মেহের অসীম দাশ, এসআই মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, এএসআই মো. রবিউল হোসেন, এসআই কে এম নাজিবুল ইসলাম তানভির, এসআই নূর নবী ও আমিন জুট মিল এলাকার লেদু মিয়ার ছেলে সোর্স শাহজাহান প্রকাশ থানার সোর্স আকাশ। এদিকে অস্ত্র মামলা দিয়ে সাইফুলকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে ৯ মাস থাকার পর গত এপ্রিল মাসে তিনি জামিনে মুক্তি পান বলে মামলা সূত্রে জানা যায়। বাদীর আইনজীবী কাজী মফিজুর রহমান আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে যাচাই বাছাই সাপেক্ষে পুলিশ কমিশনারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, গুলি করে পঙ্গু বানানোর পরও সাইফুলকে নানাভাবে হয়রানি করেছে আসামিরা। তার বিরুদ্ধে ১০টি মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। সেসব মামলার একটিতে এক মাস আগে আদালতে হাজিরা দিতে গেলে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
মামলার এজাহারে ছেনোয়ারা বেগম উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের ১৬ জুন রাতে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে বলে অঙিজেনের হোটেল জামানে সাইফুলকে ডেকে নেন সোর্স শাহজাহান। একপর্যায়ে সেখানে হাজির হন ওসি কামরুজ্জামানসহ অন্যান্য অভিযুক্তরা এবং তাকে ঘিরে ফেলেন। এ সময় ওসি কামরুজ্জামান শার্টের কলার চেপে ধরে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে তাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেন এবং একটি সাদা প্রাইভেটকারে তুলে বায়েজিদ লিংক রোডে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর এসআই মেহের অসীম দাশ গাড়িতে উঠে সাইফুলকে বলেন, উপর থেকে তোমাকে ক্রসফায়ার দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। এখন আমাদের ৫ লাখ টাকা দিলে তোমাকে ছেড়ে দিব। এ সময় সাইফুল বলেন, আমার কাছে এত টাকা নেই। কোত্থেকে দেব এত টাকা? আমি কোনো দোষ করিনি। আমি চাঁদা দেব কেন? আমাকে আদালতে সোপর্দ করুন। আমি আদালতের আদেশ মেনে চলব। সাইফুলের এমন কথা পছন্দ না হওয়ায় তাকে কলার চেপে ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে বায়েজিদ লিংক রোডের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান। একপর্যায়ে ওসি কামরুজ্জামান সাইফুলের বাম পায়ের হাঁটুর উপরে এক রাউন্ড গুলি করেন। এরপর মেহের অসীম দাশও একই পায়ে আরো এক রাউন্ড গুলি করে বেশ কয়েকটি ফাঁকা ফায়ার দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সাইফুল ইসলাম নগর ছাত্রদলের সহসম্পাদক। তার ভাই মো. সবুজ পাঁচলাইশ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। তাকেও ১০টির অধিক মামলায় ফাঁসানো হয়।