সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের মধ্যে বায়ু অন্যতম। আমাদের সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন দূষণমুক্ত পরিবেশ ও নির্মল বাতাস। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য, আমাদের দেশে দিন দিন নির্মল বায়ু বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে। বিশ্বের যেসব দেশের বায়ু ভয়াবহ দূষণের শিকার বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। নতুন এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশে ৬৪টি জেলার মধ্যে ৫৪টি জেলারই বায়ুর মান আদর্শ মাত্রার চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। আদর্শ মাত্রার মধ্যে আছে মাত্র ১০টি জেলার বায়ুর মান। এই অতিরিক্ত বায়ু দূষণের কারণে সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পড়ছে মানুষের প্রজনন ক্ষমতায়। বায়ুদূষণ মারাত্মকভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।
বায়ুদূষণের কারণে প্রথমেই প্রভাব পড়ে শ্বাসযন্ত্রের উপরে। বিশ্বব্যাপী যেসব অসংক্রামক রোগে মানুষের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে- তার অধিকাংশই বায়ু দূষণজনিত। দূষিত বায়ুর কণা এতোটাই ক্ষুদ্র যে এটি সহজেই মানুষের চোখ-নাক-মুখ দিয়ে ঢুকে রক্তের সাথে মিশে যায় এবং ফুসফুস, হার্ট, কিডনি, লিভার ইত্যাদি আক্রান্ত করে থাকে। বায়ুদূষণের কারণে ফুসফুসের ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রজনন স্বাস্থ্য। বিশেষ করে গর্ভপাত, জন্মগত ত্রুটি, শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে বায়ু দূষণ বড় ধরণের প্রভাব ফেলে। বায়ুদুষণে দেশের এমন নাকাল অবস্থা হওয়া সত্ত্বেও নেই তেমন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। বায়ুদুষণ বর্তমানে একটি আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। বায়ুদূষণণের এই বিপর্যয় থেকে বাঁচতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ গবেষণা এবং পদক্ষেপের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে বায়ুদূষণ রোধে আমাদেরকেও নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করতে হবে এবং সচেতন করে তুলতে হবে।
লেখক: শিক্ষার্থী