বাড়তি মজুরি দিয়ে বাগান পরিচালনা করা কঠিন হবে

আমিনুর রশীদ কাদেরী

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৩০ আগস্ট, ২০২২ at ৬:০৯ পূর্বাহ্ণ

ওয়াগ্‌গা টি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুর রশীদ কাদেরী চা সেক্টরের দুর্দিন শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করে বলেছেন, শ্রমিকদের আন্দোলন এই সেক্টরকে বড় একটি ধাক্কা দিয়ে গেল। এই ধাক্কা সামলে বাগানগুলো আদৌ স্বাভাবিক হতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, দেশের চা শিল্পের ইতিহাসে একই সাথে দৈনিক ৫০ টাকা মজুরি বাড়ানোর কোনো নজির নেই, নজির নেই এত দীর্ঘসময় চা বাগান অচল করে রাখারও। অথচ দুইটি কাজই একই সাথে ঘটে গেল। তিনি বলেন, ১২০ টাকা মজুরির একটি গল্প শুনিয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে শ্রমিকেরা ১২০ টাকার বাইরে আরো নানাখাতে টাকা পায়। নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি পাতা তুললে কেজি প্রতি ৫ টাকা করে বাড়তি পায়। ১২০ টাকার সাথে আনুষঙ্গিক অন্যান্য খাত মিলে একজন শ্রমিক ৪২৫ টাকার মতো মজুরি পেতো। ৫০ টাকা বাড়িয়ে মজুরি ১৭০ টাকা করার ফলে আনুষঙ্গিক সবগুলো খাত মিলে এই অংক ৫৫০ টাকায় গিয়ে ঠেকবে। শ্রমিকদের এত টাকা মজুরি দিয়ে বাগান পরিচালনা করা কিংবা টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আমিনুর রশীদ কাদেরী আরো বলেন, চা শ্রমিকেরা শুধু নগদ টাকা বেতন পাননা। তাদের জীবনধারণের প্রায় সব আয়োজনই বাগান মালিক করে দেন। ১ থেকে ২ টাকা কেজি দরে চাল-গম দেয়া, বাসস্থান দেয়া, ঘরের পাশে সবজি চাষের জন্য একটু জমি তৈরি করে দেয়াসহ নানাখাতে মালিকদের লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। একজন শ্রমিক একটি বাগানের বড় সম্পদ বলে মন্তব্য করে আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, শ্রমিকেরা বেঁচে থাকলে বাগানগুলো বেঁচে থাকবে। প্রতিজন মালিকই তাদের বাগানের শ্রমিকদের ভালো রাখতে চান, সর্বোচ্চটা করেন। কিন্তু কোনো একটি বিশেষ মহল শ্রমিকদের ব্যবহার করে বাগানগুলোকে ধ্বংস করে দেয়ার চক্রান্ত করেছে। এই চক্রান্তের ফলে প্রতিটি বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করে আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, দেশের সবগুলো বাগানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোটি কোটি টাকার পাতা নষ্ট হয়েছে। এই অবস্থায় বাগানগুলোকে আবার স্বাভাবিক উৎপাদনে আনতে বেশ সময় লাগবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি নানামুখী চক্রান্তের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সকলের সম্মিলিত চেষ্টায় সব ধরনের চক্রান্ত থেকে এই সেক্টরকে রক্ষা করতে হবে। দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সেক্টরটি ধ্বংস হলে অর্থনীতিতে মারাত্মক সংকট তৈরি হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ না করলে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ত না
পরবর্তী নিবন্ধশ্রমিকদের আন্দোলন চা বাগানগুলোকে শেষ করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট