নগরীর ইপিজেড থানাধীন এয়ারপোর্ট রোডে নিউমুরিংয়ের সামনে যাত্রীবাহী বাসে তেলবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনের ধাক্কায় রেলের এক পয়েন্টসম্যানসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় ৯নং ঘাটের সাউথইস্ট ইস্টার্ন ট্যাঙ্ক টার্মিনালের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী উক্ত ট্যাঙ্ক টার্মিনালের জুনিয়র কর্মকর্তা (অপারেশন) আহসানুল হক জানিয়েছেন।
নিহতরা হলেন রেলওয়ের পয়েন্টস ম্যান মো. আজিজুল হক (৩০), বাসের চালক ও সহকারী আসাদুজ্জামান (৩০) ও মিটন কান্তি দে (২৫)। নিহত রেলওয়ের পয়েন্টসম্যান মো. আজিজুল হক রাউজান উপজেলার কদলপুর গ্রামের আছাদ আলী বলির বাড়ির আবুল হোসেনের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে আজিজুল হক মেঝ। আজিজুল হক এক মাস আগে রেলের চাকরিতে যোগ দেয়। এখনো প্রথম মাসের বেতনও পায়নি বলে হাসপাতালে তার স্বজনরা জানিয়েছেন। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক আজাদীকে বলেন, ইপিজেড থানাধীন এয়ারপোর্ট রোড মেঘনা অয়েলের সামনে তেলবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনের সাথে যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় বাসটি উল্টে যায় এবং বাসের দুইজনসহ এক রেলকর্মীকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ৩ জনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
যে স্থানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেই স্থানটি হল–মেঘনা অয়েলের আগে ৯ নং ঘাটের সাউথইস্ট ইস্টার্ন ট্যাঙ্ক টার্মিনালের সামনে। এই প্রতিষ্ঠানের জুনিয়র কর্মকর্তা (অপারেশন) আহসানুল হক তখন অফিসে কাজ করছিলেন। তিনি গাউছিয়া কমিটির দপ্তর সম্পাদক। আহসানুল হক আজাদীকে বলেন, দুর্ঘটনার শব্দ পেয়ে আমি দ্রুত নিচে নেমে আসি। আশেপাশে কাউকে না দেখে আমি ৯৯৯–এ ফোন করে বিষয়টি জানাই। তারপর ইপিজেড থানার পুলিশকে ফোন দিই। এরপর আমার সংগঠন গাউছিয়া কমিটির বন্ধুদের ফোন দিলে সবাই এসে আহতদের নিয়ে ট্যাঙি করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমি রেলওয়ের পয়েন্টসম্যান মো. আজিজুল হককে নিয়ে এসেছি। হাসপাতালে আনলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। আমার পরে আরো যে দুইজনকে আনা হয়েছে তারাও মারা গেছেন।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা তারেক মুহাম্মদ ইমরান বলেন, মেঘনা অয়েলে তেল ভর্তি ওয়াগন আনার জন্য রেলের একটি ইঞ্জিন যাচ্ছিল। এসময় সংকেত দেয়া হলেও সংকেত উপেক্ষা করে একটি যাত্রীবাহী বাস রেললাইনের ওপরে চলে আসে। তখন রেলের ইঞ্জিনের সাথে জোরে ধাক্কায় ঘটনাস্থলে রেলের পয়েন্টসম্যান আজিজুল হক নিহত হন।
রেলওয়ের চিটাগাং গুডস পোর্ট ইয়ার্ড (সিজিপিওয়াই) এর মাস্টার আব্দুল মালেক বলেন, নিহত পয়েন্টসম্যান তেলের ওয়াগনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছিলেন। দ্রুত গতির একটি বাস এসে তেলবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে তিনি নিহত হন। তিনি সিজিপিওয়াই অধীনে দায়িত্বে ছিলেন।
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল করিম বলেন, তেলবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে আজিজুল হক মারা যান। এরপর আহত দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেই দুইজনও মারা যান।