টেকনাফ বাস টার্মিনাল। যেখানে সারি সারি কেবল ট্রাক আর ট্রাক। কালেভদ্রে কয়েকটি বাস চোখে পড়লেও এটি এখন এক প্রকার ট্রাক ট্রার্মিনালে পরিণত হয়েছে। টার্মিনাল থেকে বাস যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে অনেকদিন। তবে বাস সার্ভিস গ্রুপের একাধিক অফিস এখনো এখানে থাকলেও মূলত পৌরসভার মূল শহরে গড়ে উঠেছে একাধিক মিনি টার্মিনাল। এতে করে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হয় যানজট। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর প্রায় ৭ একর জায়গায় ২০০২ সালে টেকনাফ বাস টার্মিনালের জমি অধিগ্রহণ করে। সে বছরই তৎকালীন যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদ টার্মিনালের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে ফলক উন্মোচন করেন। এরপর থেকে জমি অধিগ্রহণ ও সীমানা প্রাচীর ছাড়া আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত কোনো স্থাপনা তৈরি করেনি কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী সময়ে জেলা পরিষদের অর্থায়নে টয়লেট ও টিনশেড কক্ষ বরাদ্দ দিয়ে টেকনাফ-কঙবাজার, টেকনাফ-চট্টগ্রাম-ঢাকাগামী পরিবহন সার্ভিস চালু করে। তবে তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ট্রাক সংশ্লিষ্ট লোকজনের আধিক্যে যাত্রী সাধারণ স্বাচ্ছন্দবোধ না করায় সেখান থেকে বাস যাতায়াত এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া সৌদিয়া, এস আলম, পালকি, মালিক গ্রুপ, শ্যামলী, হানিফ, সেন্টমার্টিন পরিবহনসহ একাধিক পরিবহন কোম্পানি টার্মিনাল বাদ দিয়ে মূল শহরের রাস্তায় অফিস নিয়ে মিনি টার্মিনাল তৈরি করে যাত্রী পরিবহন শুরু করে। এতে শহরে যানজট চরম আকার ধারণ করে আর টার্মিনালটি রয়ে যায় মূলত নামেই।
বছর দুয়েক আগে টেকনাফ পৌরসভা বাস টার্মিনাল দেখভাল করার দায়িত্ব নেয়। এরপর পৌর কর্তৃপক্ষ নতুনভাবে একতলা বিশিষ্ট অফিস কক্ষ ও শৌচাগার তৈরি করে। বেশ কয়েক বছর বাস টার্মিনাল থেকে কঙবাজার-টেকনাফ বাস যাতায়াত করেছিল। কিন্তু সম্প্রতি শহরের বাসগুলো ঢুকে অফিস খুলে বসে। যার ফলে টার্মিনাল কেন্দ্রিক পরিবহন সার্ভিস এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায়।
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য জহির হোসেন বলেন, ট্রাফিক পুলিশের অবহেলায় টেকনাফ শহরের রাস্তায় মিনি টার্মিনাল তৈরি হয়েছে। যার ফলে সাধারণ মানুষ চলাচলে দারুণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ বিষয়ে পৌর সভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলার দিল মোহাম্মদ দিলু বলেন, টার্মিনাল এলাকায় চরম অব্যবস্থাপনা বিরাজ করছে। আগামী পৌর পরিষদের সভায় এ নিয়ে আলোচনা করে বাস্তব সম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
টেকনাফ পৌর এলাকায় যানজট বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, ট্রাফিক পুলিশ ও পৌর কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিগত উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টেকনাফ পৌর সভার প্যানেল মেয়র-২ এনামুল হাসান বলেন, টার্মিনাল থেকে যাতে দূর পাল্লার পরিবহন যাতায়াত করা যায় এবং শহরের যানজট নিরসন করা যায় সে প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে অচিরেই।
