নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন বালুছড়া এলাকায় বিস্ফোরণে ওমর ফারুক (২৩) নামের একজন নিহত ও দুজন দগ্ধ হয়েছেন। গতকাল রোববার বেলা পৌনে ১১টায় বালুছড়া কাশেম কলোনিতে একটি তিনতলা ভবনের নিচতলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ওমর ফারুক নগরের চন্দনপুরা দানা বাপের বাড়ির রবিউল হোসেনের ছেলে। আহতরা হলেন বালুছড়া তুফান রোড এলাকার জাফর উল্লাহর ছেলে ফোরকান উল্লাহ (৬০) ও কাশেম কলোনির মো. আলমের ছেলে কালাম (৩০)। আহতরা চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই নুরুল আলম আশেক।
হাসপাতালের চিকিৎসকদের উদ্ধৃত করে বায়েজিদ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান জানান, আহতদের মধ্যে ফোরকানের শরীরের ৪৫ শতাংশ এবং কালামের শরীরের ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মামাতো ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে বায়েজিদ থানায় দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর একটি মামলা দায়ের করেছেন। বায়েজিদ ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার কবির হোসেন আজাদীকে বলেন, বালুছড়া এলাকায় কাশেম ভবনের নিচতলায় একটি কক্ষে বিস্ফোরণের ঘটনায় কক্ষের পাশের ও সামনের দুটি দেয়াল ধসে পড়ে। ধসে পড়া দেয়ালের চাপায় ওমর ফারুক নামের এক পথচারী নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের সময় বাসায় থাকা দুজন আগুনে দ্বগ্ধ হয়েছেন।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটা কক্ষে সামান্য আগুন পেয়েছি। আমরা যাওয়ার আগেই স্থানীয়রা তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে দেয়াল চাপায় আহত ফারুককে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরো বলেন, খুব সম্ভব গ্যাস জমে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। কারণ যে কক্ষে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেখানে কোনো গ্যাস সিলিন্ডার কিংবা কোনো বৈদ্যুতিক ডিভাইস ছিল না। এমনকি গ্যাসের পাইপ লাইনগুলোও অক্ষত পেয়েছি। ভবনটির নিচতলায় ১০ বাই ১২ ফুটের ওই কক্ষে যে দুজন ছিল, তারা রাজমিস্ত্রির কাজ করত। মূলত তিনতলা ভবনটির নিচতলার কক্ষগুলোকে ছোট ছোট করে ভাড়া দিয়েছেন ভবন মালিক।
এদিকে গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। তবে কমিটিতে কাদের রাখা হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) রওনক উল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গ্যাস লাইনে কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি। চুলা ও লাইন অক্ষত ছিল। তবে ঘরে ভেন্টিলেশন সুবিধা ছিল না। এমনকি গ্যাসের চুলার পাশেও কোনো জানালা নেই, যার কারণে ঘরের মধ্যে গ্যাস জমে ওই বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। তিনি আজাদীকে বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় বিস্তারিত জানার জন্য কর্ণফুলী গ্যাসের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে নিহত ওমর ফারুকের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা নেওয়া হয়েছে বলে জানান বায়েজিদ বোস্তামী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাইরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, সিআইডিসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সেখানে বিস্ফোরক জাতীয় কিছুর আলামত পাওয়া যায়নি। সম্ভবত গ্যাসের পাইপ লাইনের কোনো লিকেজ থেকে ওই কক্ষে গ্যাস জমে গিয়েছিল।