বায়েজিদে গার্মেন্টস থেকে কুকি-চিনের ২০ হাজার পোশাক জব্দ

মালিকসহ গ্রেপ্তার তিনজন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৬ মে, ২০২৫ at ৭:৪১ পূর্বাহ্ণ

নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার মোজাফ্‌ফর নগর ‘রিংভো অ্যাপারেলস’ নামে একটি গার্মেন্টসের গোডাউন এবং নয়ারহাটে গার্মেন্টসটির কারখানা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিষিদ্ধ ঘোষিত সশস্ত্র ‘জঙ্গি বিছিন্নতাবাদী সংগঠন’ কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) জন্য তৈরি করা ২০ হাজার ৩০০টি ইউনিফর্ম জব্দ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। জব্দৃকত ইউনিফর্ম তৈরির সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতরা হচ্ছেন– ‘রিংভো অ্যাপারেলস’এর মালিক সাহেদুল ইসলাম (২৫), মো. গোলাম আজম (৪১) ও নিয়াজ হায়দার (৩৯)

গত ১৭ মে এ ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি জানাজানি হয় গতকাল রোববার। ঘটনার বিষয়ে নগর পুলিশের দায়িত্বশীল কেউ গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, এটি রাষ্ট্রীয় বিষয় হওয়ায় পুলিশের কেউ কথা বলছেন না। সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় ১৮ মে নগর গোয়েন্দা পুুলিশের এসআই মো. ইকবাল হোসেন বায়েজিদ বোস্তামী থানায় এজাহার দিয়েছেন। এতে চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ধৃত ৩ জনের সঙ্গে আছেন মংহলাসিন মারমা ওরফে মং।

বায়েজিদ বোস্তামী থানায় দায়ের করা এজাহারের একটি কপি আজাদীর কাছে এসেছে। ওই এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত মার্চ মাসে পোশাকগুলো কারখানাটিতে অর্ডার দিয়েছিলেন গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার। তারা মংহলাসিন মারমা ওরফে মং নামে একজনের কাছ থেকে দুই কোটি টাকা চুক্তিতে পোশাকগুলো তৈরির অর্ডার নেন। মংহলাসিন মারমাসহ কুকিচিনের অজ্ঞাত সদস্যরা ইউনির্ফম তৈরির জন্য গোপনে কাপড় দিয়ে যায়।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সাহেদুল ইসলামকে মোজাফ্‌ফর নগর বড় মসজিদ সংলগ্ন শুকরান মেহের বিল্ডিং থেকে ১৭ মে রাত আড়াইটায় গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হালিশহর থানার ছোটপুল ইসলামিয়া ব্রিক ফিল্ড রোড এয়ারবেল টাওয়ার থেকে গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দারকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ধৃতদের তথ্যের ভিত্তিতে মোজাফ্‌ফর নগর আবাসিক এলাকা ৩ নম্বর রোডের আলেয়া মেনর ভবনে ‘রিংভো অ্যাপারেলস’ এর গোডাউন থেকে ৩২০টি প্লাস্টিকের সাদা বস্তায় থাকা ১১ হাজার ২০০টি ইউনিফর্ম জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে নয়ারহাট ‘রিংভো অ্যাপারেলস’ এ কারখানা থেকে ২৬০টি প্লাস্টিকের সাদা বস্তায় থাকা ৯ হাজার ১০০টি ইউনিফর্ম জব্দ করা হয়। অর্থাৎ মোট ৫৮০টি বস্তায় কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের ২০ হাজার ৩০০ পিস ইউনিফর্ম জব্দ করা হয়। প্রতি বস্তায় ছিল ৩৫ সেট করে। যার মধ্যে ছিল একটি শার্ট ও একটি প্যান্ট।

এজাহারে বলা হয়, গ্রেপ্তার ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা পরস্পর অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও যোগসাজসে বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করার প্রচেষ্টায় ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে রাষ্ট্রের সম্পত্তি বিনষ্ট, জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে রাষ্ট্রের স্বাভাবিক কাজ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করে, সন্ত্রাসী কার্য সংগঠিত করে অবৈধভাবে বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে।

এজাহারে বলা হয়, ধৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, কুকিচিন পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান জেলার একটি নিষিদ্ধ সশস্ত্র জঙ্গি বিছিন্নতাবাদী সংগঠন। কুকিচিনের সদস্যরা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থান করে। বিভিন্ন মানুষজনের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়, হত্যা, অপহরণ, গুমসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএনবিআরকে বিলুপ্ত নয়, স্বতন্ত্র বিভাগের মর্যাদা
পরবর্তী নিবন্ধপতেঙ্গা সৈকতে গুলিবিদ্ধ সন্ত্রাসী ঢাকাইয়া আকবরের মৃত্যু