বামনশাহী-কাটাখালী খাল হয়ে হালদায় পড়ছে টনে টনে বিষাক্ত বর্জ্য

মীর আসলাম, রাউজান | শনিবার , ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদার সংযুক্ত খাল উপখাল হয়ে প্রতিদিন শত শত টন বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে এসে পড়ছে। নদীর পাড়ের মানুষের অভিযোগ নদী ও পারিপার্শিক পরিবেশ রক্ষায় যাদের উপর দায়িত্ব রয়েছে তাদের উদাসীনতায় বিশেষায়িত এই নদীটি এখন দূষণের কবলে পড়ে মরতে বসেছে। নদীর সাথে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতে এশিয়ার বৃহত্তর প্রাকৃতিক এই মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্রে গত কয়েক বছর থেকে একের পর এক মা মাছ , ডলফিন মরে ভেসে উঠছে। সম্প্রতি হালদা নদীর সাথে যুক্ত কয়েকটি খালের পাড় ঘুরে দেখা গেছে দুই পাড়ে রয়েছে সারি সারি মুরগির খামার। এসব খামারের বিষ্টা প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে খালের পানিতে। খালে সদ্য নিক্ষিপ্ত বিষ্টা পানিতে পড়ে রাসায়নিক ক্রীড়ায় পানির মধ্যে ধোঁয়ার সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। কোনো কোনো স্থানে দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশকে বিষাক্ত করে তুলেছে। বিষ্টা ফেলার কারণে পানি বিষাক্ত হয়ে কালো চিকচিকে রঙ ধারণ করেছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, বামনশাহী ও কাটাখালী খালে বর্জ্য পড়ে থাকার ভয়াবহতার চিত্র। নগরীর অন্যন্যা আবাসিক এলাকার পাশ দিয়ে প্রবাহমান এই উপখালের সাথে যুক্ত আছে নানা দিক থেকে বহু নালা নর্দমা। এই পথে পঁচা বিষাক্ত বর্জ্য এসে জমা হচ্ছে খন্দকিয়া খালে। এই খালের পঁচা বিষাক্ত পানি পড়ছে হালদা নদীতে। স্থানীয়রা বলেছেন, কালো চিকচিকে পঁচা পানিতে প্রতিনিয়ত মশা মাছির বিস্তার ঘটছে। পঁচা পানির দুর্গন্ধে আশেপাশে মানুষকে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে। মুরগির খামারের সৃষ্ট বর্জ্য ফেলার ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে হাটহাজারী উপজেলার কাটাখালী খালে।

মাছের মা খ্যাত হালদা নদীর এমন দশা নিয়ে কথা বললে হালদা বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, হালদার দূষণ নিয়ে আমরা বহু বছর থেকে কথা বলে আসছি। দূষণ প্রতিরোধে করণীয় নিয়ে সুপারিশ করেছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফলতা পেয়ে আসলেও এখনো এই বিশেষায়িত নদীটিকে দূষণের কবল থেকে মুক্ত করতে পারিনি। যারা নদীর পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখার কথা তাদের উদাসীনতা বারবার লক্ষ্য করেছি। আমাদের পরিদর্শনের অভিজ্ঞতায় দূষণের স্পটসমূহ চিহ্নিত করে পরিবেশ অধিদপ্তরকে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধও করেছি। কিন্তু এতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না দেখলে আমাদেরকে হতাশই হতে হয়। হালদা দূষণ বিষয়ে কথা বললে চট্টগ্রাম মেট্রো এলাকার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সোনিয়া সুলতান বলেন, আমরা দূষণ এলাকায় পরিদর্শন করে কিছু ব্যক্তিকে পরিবেশ দূষণ করার অপরাধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। অন্যন্যা আবাসিক এলাকাটি সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে বিষয়টি সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানিয়েছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিবিইউএফটিতে কম্পিউটার, পলিউশন ও এর্গোনমিক্স বিষয়ক সেমিনার
পরবর্তী নিবন্ধঅবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিতকরণে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে