চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর বড়উঠান গ্রাম এখন নিস্তব্ধ। একের পর এক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে পরিবার, ভেঙে পড়েছে গোটা গ্রামও।
দেড় মাস আগেই এই বাড়িতে নেমেছিল শোক। ইউসুফ সওদাগর বার্ধক্যজনিত রোগে না ফেরার দেশে চলে গেলে স্বজনরা ভেবেছিল—সময় হয়তো ধীরে ধীরে ক্ষত মুছে দেবে। কিন্তু ভাগ্য যেন আরেকটা নির্মম আঘাতের অপেক্ষায় ছিল।
আজ শনিবার বিকেল ৫টায় আবার কেঁদে উঠল একই ঘর। ইউসুফ সওদাগরের ছোট ছেলে, মাত্র ২৬ বছরের মাদ্রাসাশিক্ষক মেজবাহ উদ্দিন বাবুও চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
বৃহস্পতিবার সকালে যথারীতি মাদ্রাসায় গিয়েছিলেন মেজবাহ। দুপুরে বাড়ি ফেরার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান, তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। দুই দিন লড়াইয়ের পর শেষ পর্যন্ত জীবনযুদ্ধে হার মানলেন।
মাত্র আট মাস হলো মেজবাহর বিয়ে। সদ্য বিবাহিত স্ত্রী নাসরিন সুলতানা স্বামীর নিথর দেহের পাশে দাঁড়িয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। কান্নার ফাঁকে শুধু বলছিলেন—“শ্বশুরের পর স্বামীকেও হারালাম। আমি এখন কার জন্য বাঁচব?”
তিন ভাই চার বোনের পরিবারে মেজবাহ ছিলেন সবচেয়ে ছোট। বড় দুই ভাই আছেন প্রবাসে। পরিবারের সবার আদরের এই ছেলেটিকে হারিয়ে স্বজনদের বুক ফাটা কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পুরো গ্রাম।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ছানোয়ারা বেগম চোখ মুছতে মুছতে বললেন, “এমন নম্রভদ্র ছেলেটিকে কে নিতে পারে! বাবার দেড় মাস পরই ছেলেও চলে গেল। পরিবারটা এখন অসহায় শোকে ভেঙে পড়েছে।”
শোকের মেঘে ঢাকা পড়েছে কর্ণফুলীর বড়উঠান গ্রাম—যেখানে এখনও বাজছে করুণ ক্রন্দন, ভেসে আসছে নিথর হাহাকার।
মেজবাহ উদ্দিন বাবু বড়উঠান ৪ নম্বর ওয়ার্ড কবির মাঝির বাড়ির মৃত ইউসুফ সওদাগরের ছেলে।