বান্দরবানে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল রোববার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাহাড় কাটার অপরাধে মো. ইয়াছিন নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয় তাকে। এসময় পাহাড় কাটার কাজে ব্যবহৃত একটি স্কেভেটরও জব্দ করা হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, বান্দরবান সদরের কালাঘাটা-ছাইঙ্গা সড়কের পার্শ্ববর্তী আজুগুহা এলাকায় স্কেভেটর দিয়ে বিশাল একটি পাহাড় কাটা হচ্ছে। পাহাড় কেটে ৭টি ডাম্পার ট্রাকযোগে মাটিগুলো রামজাদী এলাকায় চাষাবাদের জমি ভরাটের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা থোয়াইনু মারমা, লাগ্যচিংসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, পাহাড় কাটার ধূলা বালিতে বাসায় থাকা যায় না। বর্ষাকালে পাহাড় ধসে মানুষ মারা যায়। কিন্তু পাহাড় কাটতে মানা করলেও তারা শোনে না, উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করার ভয়ভীতি দেখায়। গ্রামবাসী বাধা দিয়েও কোনো লাভ হয় না।
অভিযুক্ত মোহাম্মদ ইয়াছিন ও রহিম বলেন, জায়গার মালিকের সম্মতিতেই পাহাড়গুলো কাটা হচ্ছে। রামজাদী এলাকায় চেয়ারম্যানের জায়গা ভরাটের জন্য ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বা প্রশাসনের লিখিত কোনো অনুমোদন নেয়া হয়নি। তবে মোটামুটি সবার সাথে আলোচনা এবং দেখা সাক্ষাত করেই স্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কাটা হচ্ছে। পাহাড় কেটে ৬/৭টি ডাম্পার ট্রাকে করে মাটিগুলো নিয়ে চেয়ারম্যানের জায়গাটি ভরাটের কাজ করা হচ্ছে। ভরাটের জায়গাটি একসময় মৎস্য ও ধানের চাষাবাদ হত।
পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবানের পরিদর্শক আব্দুস সালাম বলেন, পাহাড় কাটার কোনো অনুমোদন নেই। কালাঘাটা, রামজাদী, আজুগুহা এলাকায় পাহাড় কাটার খবর পেয়েছি। কয়েকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি মামলার প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি জানান, পাহাড় কাটা আইনগত অপরাধ। পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির খবর পেয়ে প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে একজনকে জরিমানা করেছে। পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে সোচ্ছার রয়েছে প্রশাসন। অভিযোগ পেলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।