এক বনে বাস করত এক দুষ্টু বানর। বনের সবাই তাকে বানর মামা বলে ডাকতো। সে একটা বড় গাছে থাকতো। বানর মামা সারাদিন লাফাতো, খেলতো আর নানা রকম দুষ্টুমি করতো।
ওদিকে পাশের গাছেই থাকতো এক অলস কাক। সবাই তাকে কাক্কু বলে ডাকতো। কাক্কু খুব চালাক, কিন্তু কাজ করতে একদম ভালোবাসতো না। সে ভাবতো, “যদি কাউকে ফাঁকি দিয়ে ফল খেয়ে নেওয়া যায়, তাহলেই তো মজা!”
একদিন কাক্কু দেখলো, বানর মামা এক ঝুড়ি কলা নিয়ে বসে আছে। সে লোভে পড়ে গেল। মনে মনে ভাবলো, “এই কলাগুলো যদি চালাকি করে খেয়ে ফেলতে পারি, তাহলে জীবন সার্থক!”
কাক্কু তখন কৌশলে বলল, “মামা, তোমাকে একটা রাজ–খবর দিতে এসেছি!”
বানর মামা হেসে বলল, “রাজ–খবর! কী ব্যাপার কাক্কু, আজ আবার এত ভালো কথা?”
কাক্কু চোখ গোল করে বলল, “জানো মামা, আজ রাজা বাবু ঘোষণা দিয়েছেন্তযে বানর কলা খাওয়ার কৌশল অন্য কাউকে খুব সহজে এবং সবচেয়ে ভালোভাবে শিখাতে পারবে, তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে!”
বানর মামা তো খুব খুশি। সে ভাবলো, “এ সুযোগ তো হাতছাড়া করা যায় না!”
কাক্কু বলল, “তুমি যদি আমাকে কলা খাওয়ার কৌশল শিখাও এবং কিছু কলা দাও, আমি সেগুলো নিয়ে উড়ে গিয়ে সবাইকে কলা খাওয়া দেখাবো, আর বলবো যে তুমি শিখিয়েছো! ব্যস, তোমার পুরস্কার নিশ্চিত!”
বানর মামা একটু সন্দেহ করলো, কিন্তু তারপর বলল, “ঠিক আছে। আমি তোমাকে কলা খাওয়ার কৌশল শিখাচ্ছি এবং কিছু কলা দিচ্ছি!”
কাক্কু কলা নিয়ে উড়ে গেল তো গেল! আর ফিরে এলো না! বানর মামা খোঁজ নিয়ে জানলো রাজা এ ধরণের কোনো ঘোষণা দেননি। কাক্কু মিথ্যা বলে ঠকিয়েছে।
পরদিন কাক্কু আবার এলো, আর নতুন গল্প শোনালো্ত“তোমার কৌশল পছন্দ হয়নি! আজ আম কাঁঠালের পরীক্ষা হবে!”
বানর মামার তো জানাই আছে কাক্কু মিথ্যা বলছে। বানর মামা এবার এক বুদ্ধি আঁটলো।
বানর মামা বলল, “আচ্ছা কাক্কু, আজ আম কাঁঠাল খাওয়ার কৌশল শিখানোর আগে আমি তোমাকে রাজা বানিয়ে ছবি তুলবো, কিন্তু তার আগে চোখ বেঁধে রাখতে হবে, এটা রাজকীয় নিয়ম।”
কাক্কু খুশি হয়ে চোখ বেঁধে নিলো।
তারপর?
তারপর বানর মামা কলার খোসা দিয়ে কাক্কুর মাথায় একটা সুন্দর টুপি বানিয়ে পরিয়ে দিলো, আর গাছের নিচে বসে সবাইকে ডেকে বলল, “এই দেখো, কলা চোর রাজা! চোখ বাঁধা, কারণ লজ্জা পায়!”
সব পশু হেসে লুটিয়ে পড়লো। কাক্কু লজ্জায় লাল হয়ে উড়ে পালালো।