অসীম বানর উপপাদ্য নামে পরিচিত পুরোনো একটি তত্ত্বকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার দুই গণিতবিদ স্টিফেন উডকক ও জে ফ্যালেটা। পুরোনো ওই তত্ত্ব অনুযায়ী, একটি বানর অসীম সময় ধরে টাইপরাইটারে এলোমেলোভাবে টাইপ করতে থাকলে শেষ পর্যন্ত উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের পুরো সাহিত্যকর্ম লিখে ফেলতে পারবে। খবর বিডিনিউজের।
তত্ত্বটি এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে সম্ভাব্যতা এবং দৈবক্রমে কিছু ঘটার সুযোগ থাকার নিয়ম ব্যাখ্যা করতে ব্যবহার করে আসছেন গণিতবিদরা। কিন্তু সিডনির গবেষক স্টিফেন উডকক ও জে ফ্যালেটারের নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, শেক্সপিয়ারের নাটক, কবিতা এবং সনেট হুবহু টাইপ করতে আমাদের মহাবিশ্বের আয়ুর চেয়েও বেশি সময় লেগে যাবে বানরের। অর্থাৎ, এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড শেষ হয়ে গেলেও বানর শেক্সপিয়ার টাইপ করতে পারবে না। ফলে গবেষক উডকক ও ফ্যালেটার বলছেন, পুরোনো অসীম বানর উপপাদ্য টি গাণিতিকভাবে সত্য হলেও সেটি আসলে বিভ্রান্তিকর। গবেষকরা কেবল একটি বানরের সক্ষমতাই খতিয়ে দেখেননি বরং বর্তমানে পৃথিবীতে থাকা ২ লাখের মতো শিম্পাঞ্জি নিয়েও তারা কয়েক দফা হিসাব–নিকাশ করে দেখেছেন।
গবেষণার ফলে দেখা গেছে, যদি বিশ্বের প্রতিটি শিম্পাঞ্জিকেও কাজে লাগানো হয় এবং তারা যদি মহাবিশ্বের শেষ সময় পর্যন্ত প্রতি সেকেন্ডে একটি করে বাটন টিপার গতিতে লিখতেও পারে, তবুও তারা এমনকি শেক্সপিয়ারের রচনা পুরোপুরি টাইপ করার ধারেকাছেও যেতে পারবে না।
একটি শিম্পাঞ্জির জীবনকালে ব্যানানাস শব্দটি টাইপ করার সম্ভাবনা মাত্র ৫ শতাংশ। আর দৈবক্রমে একটি শিম্পাঞ্জির আই চিম্প, দেয়ারফোর আই অ্যাম বাক্যটি টাইপ করে ফেলার সম্ভাবনা ১০ মিলিয়ন বিলিয়ন বিলিয়ন (১ হাজার কোটি কোটি কোটি) ভাগের একভাগ মাত্র। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, টাইপিং স্পিড বাড়লেও বা শিম্পাঞ্জির সংখ্যা বাড়ালেও তাদের এই শ্রম কখনও অর্থপূর্ণ লেখনী রচনায় কার্যকর হবে সেটি বিশ্বাসযোগ্য নয়।