বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ

চট্টগ্রাম চেম্বারে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:৪১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম চেম্বার নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেছেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মিসেস মাকাওয়াদী সুমিতমোর। গতকাল সন্ধ্যায় নগরীর আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় থাই রাষ্ট্রদূত দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুসস্পর্ক ও সহযোগিতার ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
মাকাওয়াদী সুমিতমোর বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উন্নয়নে এখনো অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধি সম্ভব হবে। সমুদ্রপথে সরাসরি জাহাজ যোগাযোগ স্থাপনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে থাই কর্তৃপক্ষের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অপেক্ষমাণ রয়েছে। এই চুক্তি সম্পন্ন হলে তা বাণিজ্য সহায়ক হবে। অন্যদিকে বর্তমানে থাইল্যান্ডে ভ্রমণেচ্ছু বাংলাদেশীদের জন্য ১৪ দিনের পরিবর্তে সাতদিন কোয়ারেন্টিন ঘোষণা করা হয়েছে। যা করোনা পরিস্থিতি উন্নতির সাথে সাথে আরো হ্রাস পাবে। আগামী বছর থাই বাংলাদেশ বন্ধুত্বের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে একটি ‘রোড শো’ আয়োজন করার পরিকল্পনার কথা জানান থাই রাষ্ট্রদূত। একইসাথে থাই সরকারের প্রস্তাবিত এফটিএ বাস্তবায়নে চট্টগাম চেম্বারের সহযোগিতা কামনা করেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন বলেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০১৮ সালে অনেক ভালো অবস্থানে থাকলেও পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণের কারণে তা হ্রাস পায়। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ হতে ৭৪ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার রপ্তানির বিপরীতে ৯৭৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করা হয়। এ বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে থাইল্যান্ডে বিভিন্ন প্রদর্শনী এবং ট্রেড শো আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশী পণ্যের পরিচিতি বৃদ্ধির করা প্রয়োজন। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে র‌্যানং বন্দরের সরাসরি সমুদ্রপথে জাহাজ চলাচল শুরুর মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সময় ৩-৪ দিনে এবং পরিবহন ব্যয় অর্ধেকে নেমে আসবে বলে আশা করি। এছাড়া থাইল্যান্ডের মৎস্য খাতে ৫০ হাজার বাংলাদেশী জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া পুনরায় চালু করা, সে দেশের শ্রম বাজারের উপযোগী দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন, চট্টগ্রাম হতে চিয়াংমাই, ব্যাংকক সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালু করা, জ্বালানি খাতে প্রস্তাবিত ২৫০ মিলিয়ন ডলারের থাই বিনিয়োগ বাস্তবায়নে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম চেম্বার ব্যাংকক চেম্বার বা থাই বিজনেস কাউন্সিলের সাথে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করতে পারে। থাই অনারারী কনসাল আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, র‌্যানং বন্দরে পণ্য পরিবহন সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে থাই সরকার রেলপথ ও সড়ক পথ উন্নয়ন করছে। এছাড়া কঙবাজারের সাথে থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের বিমান যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে পর্যটন খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব বলে মনে করি। এছাড়া যৌথ উদ্যোগে শিল্প স্থাপনে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদেরকে থাই ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের পরামর্শ দেন তিনি।
আরো বক্তব্য রাখেন চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন, সাজির আহমেদ, মতবিনিময়ের পূর্বে রাষ্ট্রদূত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের পারমানেন্ট এঙিবিশন হল পরিদর্শন করেন।
মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সেন্টার অব এঙিলেন্সের (বিসিই) প্রধান নির্বাহী ওয়াসফি তামিম। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চেম্বার পরিচালক একেএম আক্‌তার হোসেন, মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, মো. ওমর ফারুক, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, শাহজাদা মো. ফৌজুল আলেফ খান, মো. ইফতেখার ফয়সাল, এসএম তাহসিন জোনায়েদ, মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম, তানভীর মোস্তফা চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিরুল আলম ফাহিম, দূতাবাসের মিনিস্টার কাউন্সেলর পানম থংপ্রায়ুন, মিনিস্টার কাউন্সেলর (কমার্শিয়াল) খেমাথেট আর্চাওয়াথামরং, কাউন্সেলর ডুয়ানসিব পাদ্মসুন্দারা কূলেন, সেকেন্ড সেক্রেটারি কুসুমা সারীবুনিয়ারিত, থার্ড সেক্রেটারি বুদসারা সাদাএনগ্রিত, রাষ্ট্রদূতের ব্যক্তিগত সচিব ওয়ারাসান বিনতে ইসরাইল, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সানভিরাজ হাসান নিলয় এবং ও চেম্বার সেক্রেটারি ইনচার্জ প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারুক প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসমাধান কি সিটি গভর্ন্যান্সে
পরবর্তী নিবন্ধলালদিয়ার চরের ৫০০ অসহায় পেল খাদ্য সামগ্রী