সমন নিয়ে কেন বাড়িতে প্রবেশ কৈফিয়ত চেয়ে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একজন জারিকারকের (প্রসেস সার্ভার) ওপর হামলা করা হয়েছে। তার নাম শাহজাহান কবির। একটি সিআর মামলায় বিচারকের জারি করা সমন পৌঁছে দিতে গিয়ে তিনি হামলার শিকার হয়েছেন। গত ২৯ আগস্ট নগরীর চকবাজারের ডিসি রোড চাঁন মিয়া মুন্সী লেনের হাজী আমির হোসেন সওদাগরের বাড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন, মোহাম্মদ কাসেম। তিনি আমির হোসেন সওদাগরের বাড়ির মৃত হাজী আমির হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় জারিকারক শাহাজান মিয়া চকবাজার থানায় মোহাম্মদ কাসেমের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। পরে থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠাতে নির্দেশ দেন।
চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির আবুল কালাম আজাদ আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শাহজাহান কবিরকে প্রথমে ধাক্কা দেওয়া হয়। গলায় ঝুলানো আদালতের আইডি কার্ড ছিড়ে ফেলা হয়। এরপর কিল, ঘুষি ও লাথি মারা হয়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়। এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঞ্জুর কাদের মজুমদার বলেন, মামলা পরবর্তী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অভিযুক্ত মোহাম্মদ কাসেমকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করেছি। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার এজাহারে জারিকারক শাহজাহান কবির উল্লেখ করেন, একটি সিআর ২৫১/২০২৩ (চকবাজার) মামলার আসামি মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন। তার বিরুদ্ধে আদালতের জারিকৃত সমন পৌঁছে দিতে তিনি চকবাজারের নাছির মার্কেটে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন দোকান ছেড়ে দিয়েছেন। এই দোকান থেকে ৫০০–৬০০ গজ দূরে অর্থাৎ ডিসি রোডের চাঁন মিয়া মুন্সী লেনের হাজী আমির হোসেন সওদাগরের বাড়ি এলাকায় তার অপর ঠিকানা রয়েছে। একপর্যায়ে সেখানে গিয়ে আলতাফ হোসেনের সম্পর্কে দারোয়ানকে জানালে দারোয়ান তাকে বসতে বলেন এবং আলতাফ হোসেনকে খবর দেয়ার জন্য উপরে যান। খবর পেয়ে আলতাফ হোসেনের ভাইয়ের ছেলে এবং বড় ভাই অভিযুক্ত মোহাম্মদ কাসেম আসেন। মোহাম্মদ কাসেম কোনো কারণ ছাড়াই আচমকা প্রচণ্ড বেগে তার দিকে তেড়ে এসে সজোরে ধাক্কা মারেন। গলায় ঝুলানো আদালতের আইডি কার্ড ছিড়ে ফেলেন। পরিচয় দিলেও তিনি তাতে কর্ণপাত না করে তাকে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম করেন। তার আচরণ এত ক্ষিপ্ত ছিল যে, আশেপাশের ৪–৫জন লোকও তাকে থামাতে পারছিলেন না। কেন সমন নিয়ে বাড়িতে ঢুকলাম সেজন্য তিনি কৈফিয়ত চেয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় আদালত, পুলিশ এবং উকিল–মুন্সিকে নিয়ে বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। কোনো কারণ ছাড়াই অভিযুক্ত মোহাম্মদ কাসেম সরকারি কাজে বাধা দিয়েছেন এবং অপরাধজনক বল প্রয়োগ ও আক্রমণ করেছেন। ভবিষ্যতে তার বাসায় কোনো মামলার বিষয়ে কাগজপত্র নিয়ে গেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও শাহজাহান কবির এজাহারে উল্লেখ করেন।