বাজেটে সর্বোচ্চ গুরুত্ব থাকছে মূল্যস্ফীতি রোধে : অর্থ প্রতিমন্ত্রী

| বুধবার , ২৯ মে, ২০২৪ at ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ

আগামী অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে পিকেএসএফ ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আগামী ৬ জুন জাতীয় সংসদে আগামী ২০২৪২০২৫ অর্থবছরের জন্য বাজেট উত্থাপন করা হবে। বাজেট চূড়ান্ত করার আগে সেখানে কী কী পরিবর্তন আসছে তা নিয়ে চলছে কাটাছেঁড়া। বাজেট প্রণয়ন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তগুলো ভূমিকা রাখছে কি না জানতে চাইলে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ কোনো শর্ত দিচ্ছে তা বলব না। অর্থনীতিকে টেকসই করতে বিশ্বব্যাপী যে মূল্যস্ফীতির সমস্যা আছে সেগুলো থেকে বাংলাদেশ বাইরে নয়। সেই সমস্যাগুলো নিরসনে প্রস্তাবিত বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া হবে। খবর বিডিনিউজের।

খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমাতে কোনো উদ্যোগ থাকবে কি না, এমন প্রশ্নে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, কৃষিজাত পণ্য ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সারবীজ ইত্যাদিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেচের জন্য বিদ্যুতেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। খাদ্য সহায়তার জন্য শেখ হাসিনার সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। প্রস্তাবিত বাজেটে খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য সব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কৃষিজাত পণ্য ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সার, বীজ ও সেচের বিদ্যুতে সর্বোচ্চ ভর্তুকি দেওয়া হয়। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বর্তমান সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতিতে বিশ্বে রোল মডেল। তারপরও ঘূর্ণিঝড় রেমালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যেসব কৃষক ও উদ্যোক্তার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণে কৃষি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন উদ্যোগ নেবে। আগামী বাজেটে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও কৃষকের জন্য আগে থেকেই বরাদ্দ করা হয়েছে। জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্টইফাদ এর সঙ্গে যৌথভাবে প্রমোটিং এগ্রিকালচারাল কমার্শিয়ালাইজেশন অ্যান্ড এন্টারপ্রাইজেস (পেইস) শীর্ষক প্রকল্প হাতে নিয়েছিল পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন পিকেএসএফ। গতকাল মঙ্গলবার ছিল নয় বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের সমাপনি অনুষ্ঠান। পিকেএসএফ ২০১৫ থেকে ২০২৩ সময়ে প্রকল্পটি কৃষি বাণিজ্যিকীকরণসহ কৃষি ও অকৃষি খাতে ক্ষুদ্র উদ্যোগ সমপ্রসারণের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে বাস্তবায়ন করেছে।

পিএসএফএর চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইফাদ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. আর্নড হ্যামেলিয়ার্স। স্বাগত বক্তব্য দেন পিকেএসএফএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. নমিতা হালদার এবং অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের প্রকল্প বিষয়ে উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে পিকেএসএফএর কর্মকর্তাবৃন্দ, উন্নয়ন সহযোগী, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও উদ্যোক্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পিকেএসএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নমিতা হালদার বলেন, এই প্রকল্পের মূল কাজ ছিল কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের অভিজ্ঞতা বিতরণ করে উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা। মানুষকে সচেতন করা ও দারিদ্র্য বিমোচন করা। প্রকল্পের শতভাগই অর্জন হয়েছে। ইফাদ সারা পৃথিবীতে যে ৭০০ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তার মধ্যে এই পেইস প্রকল্পটি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। প্রকল্পের কিছু কাজ তুলে ধরে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা নদী বিষয়ক গবেষণা সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। কেউ উদ্যোগ নিতে চাচ্ছেন, কিন্তু অর্থ ও প্রশিক্ষণের অভাবে এগোতে পারছেন না। এমন মানুষদের নিয়ে কাজ করা হয়েছে।

প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে ইফাদের কান্ট্রি ডিরেক্টর আর্নড হ্যামেলিয়ার্স বলেন, বাংলাদেশ ‘প্রায় উন্নত’ দেশের পর্যায়ে চলে এসেছে। বিশ্বজুড়ে ইফাদঅর্থায়িত প্রায় ৭০০ প্রকল্পের মধ্যে পেইস গুণগত মানের দিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ প্রকল্প।

বাংলাদেশের কৃষি খাতকে অধিক উৎপাদনশীল ও টেকসই করার লক্ষ্যে ইফাদ পিকেএসএফএর সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।

সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফএর চেয়ারম্যান এম. খায়রুল হোসেন বলেন, পেইস প্রকল্পটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি মানুষের প্রযুক্তিগত জ্ঞান বৃদ্ধি করেছে এবং তাদের নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিখোঁজের দুদিন পর ড্রেন থেকে কিশোরের লাশ উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধবন্দরের বয়ায় আটকে যায় পণ্যবাহী বিদেশি জাহাজ