একে একে মুছে যায় সব দৃশ্য
ক্রমশ আড়াল হতে থাকে রোদ–
বৃষ্টির উল্লাস– মেঘের লুকোচুরি;
পাতায় পাতায় দোল খায় ঘনান্ধকার রাত!
মাইকেলের কথা মনে পড়ে!
আমাদের কাইজার! পাতাপোড়া ঘ্রাণে
শিরা–উপশিরায় আর দ্যাখে না
মেঘ ভেদ করে উড়ে আসা পরমহংসের
শুভ্র মুরতি প্রেমিকার উদরে কাটছে সাঁতার!
গঞ্জের উঠতি মহাজন ফয়ছল নিভে গেছে,
নিভে গেছে তার তৃষ্ণার আগুনসমেত
কোলাহল নিয়ে আধুয়ার জন্মঘ্রাণে!
কতগুলো মাছ আর মাছরাঙার মতো
শিকারের গল্প নিয়ে হাঁটা এই সময়ের পাটাতন
সেতু গড়ে শূন্যতার এপার–ওপারে !
আহা কাইজার! কতদূর হাঁটলে বন্ধু?
পরমাত্মা! পরমাত্মা! বলে বাউলের আখড়া থেকে
নির্ঘুম রাতের পয়গাম নিয়ে কাজীর দেউরি, চারুকলা
কেন্দুয়ার হাওর অথবা একটি মানুষের জীবন কীভাবে
মুছে দিতে পারো মুছে না–দেওয়ার
সকল অজুহাত বানচাল করে?
মানুষের তীব্র দুর্গন্ধ ভোলে
নিয়েছিলে যে ক’টি পদক্ষেপ
তাও কি মুছে যেতে পারতে অনায়াসে তুমি?
শূন্যতার সুগন্ধী বনের ধ্যান ছেড়ে এই লোকালয়ে
তুমি আর আসবে না জেনেও কালপুরুষ জাগে রাতভর
বৃষ্টির অপেক্ষায় কাটে চাতকের দিন, মৌনব্রত নিয়ে
গৈরিক সন্ন্যাসী পেরোয় প্রান্তর!
ফেরা আর না–ফেরার মাঝে বিস্তীর্ণ মাঠে
বাজে তবু সুরের কীর্তন, পায়রার উড়াল!
আহা কাইজার! মাইকেল কাইজার!
সব নদী ফুরোলেই কি পাওয়া যায় সাগরের স্বাদ?
নিজস্ব রমণীর মতো বুকে আগলে নেয় সমস্ত দৃশ্যের অবসান?