মৌসুমী ফল কালীপুরের রসালো লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। শুরু থেকে লিচু চাষিরা বৃষ্টির জন্য হাহাকার করলেও শেষ পর্যায়ে এসে বেশ কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় চাষিরা ভয় পেয়েছিল। তবে ঝড় ও বাতাস কম হওয়াতে ফলনের তেমন ক্ষতি হয়নি বলে জানান তারা।
বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু ছালেক জানান, এবার চলতি মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। বাঁশখালীতে এবার সাড়ে ৭ শত হেক্টর লিচু বাগান হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয়েছে কালীপুর ইউনিয়নে। স্থানীয় জাতের লিচুর পাশাপাশি উন্নত জাতের লিচু বোম্বাই, চায়না ৩, মোজাফফর চাষ দিন দিন বাড়ছে।
শুরুতে প্রতি শত লিচুর দাম ২৫০/৩০০ টাকা হলেও অল্প কিছু দিনের মধ্যে তা কমে আসবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, বর্তমানে আগাম লিচু বাজারে আসা শুরু করেছে। তবে সপ্তাহখানেক পর প্রচুর পরিমাণ লিচু বাজারে পাওয়া যাবে।
উপজেলার কালিপুর লিচুর জন্য বিখ্যাত যুগ যুগ ধরে। এছাড়া সাধনপুর, পুকুরিয়া, বৈলছড়ি, গুণাগরি, পুকুরিয়া, জঙ্গল জলদি, জঙ্গল চাম্বল, পুইছড়িসহ প্রতিটি ইউনিয়নেই বাণিজ্যিক ও ঘরোয়াভাবে লিচু চাষ হয়। উপজেলায় এবার ৭শত হেক্টর বাগানে লিচু চাষ হলেও এরমধ্যে শুধু কালিপুরে রয়েছে ৩০০ হেক্টর। কালিপুরে স্থানীয় জাত ছাড়াও রাজশাহী বোম্বে, বারি ১, ২, ৩ ও ৪ এবং চায়না-৩ জাতের লিচু বাগান রয়েছে।
কালিপুরের লিচু আকারে একটু ছোট, কিন্তু স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। তাই চট্টগ্রামসহ সারা দেশের মানুষের কাছে কালীপুরের লিচু বেশ সমাদৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে।
উপজেলার লিচু বাগানগুলোতে গিয়ে দেখা যায় গাছে গাছে থোকায় থোকায় পাকা লিচু ঝুলছে। উপজেলার পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালিপুর, পৌরসভা সদর জলদী হয়ে বৈলছড়িসহ বিভিন্নস্থানে পাহাড়ি এলাকাজুড়ে সড়কের পাশে, বাড়ির আঙ্গিনায়, পাহাড় ও লোকালয়ের লিচু বাগানে এখন শুধু লিচু আর লিচু।
কালিপুরের লিচু বাগান মালিক আবুল কালাম বলেন, লিচুর ভাল ফলন হয়েছে। আরেকটু বৃষ্টি হলে লিচুগুলো আরও রসালো হতো। বর্তমানে খুচরা বাজারে শত প্রতি লিচু বিক্রি হচ্ছে ২০০, ২৫০ /৩০০ টাকা দরে।
কালীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ.ন.ম. শাহাদত আলম বলেন, বাঁশখালীর অধিকাংশ লিচু আমার কালীপুর ইউনিয়নে উৎপাদিত হয়। এখানকার লিচু রসালো ও সুস্বাদু তাই দূর-দুরান্ত থেকে লিচু ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা এখান থেকে লিচু নিয়ে যায়। এখানে লিচু ব্যবসায়ীদের বেচাকেনায় কোনো সমস্যা কিংবা ঝুঁকি নেই।