বাজারে আসছে কালীপুরের রসালো লিচু

বাঁশখালীতে সাড়ে ৮০০ হেক্টর জুড়ে চাষ

কল্যাণ বড়ুয়া, বাঁশখালী | বৃহস্পতিবার , ১ মে, ২০২৫ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

দেশের মৌসুমী ফলের মধ্যে অন্যতম লিচু। আর লিচুর কথা হলেই প্রথমে আসে বাঁশখালীর কালীপুরের লিচুর কথা। কালীপুরের রসালো লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। বৃষ্টি না হওয়ায় প্রথমে চাষিরা দুশ্চিন্তায় ছিলেন। মাঝে দুয়েকবার বৃষ্টি হওয়ায় মোটামুটি ফলন হয়েছে। ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কায় যেসব লিচুতে রং ধরেছে চাষিরা সেসব বাজারে তুলতে শুরু করেছেন। তবে শুরুতে লিচুর স্বাদ ও পুষ্টি নিয়ে কথা উঠলেও আর কয়েকদিনের মধ্যে পরিপূর্ণ স্বাদ ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন লিচু বাজারে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। বর্তমানে মৌসুমের শুরুতে প্রতি একশ লিচু ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হলেও কিছুদিনের মধ্যে তা কমে আসবে বলে।

বাঁশখালী উপজেলার কালীপুর লিচুর জন্য বিখ্যাত। এছাড়া সাধনপুর, পুকুরিয়া, বৈলছড়ি, গুনাগড়ি, পুকুরিয়া, জঙ্গল জলদি, জঙ্গল চাম্বল, পুইছড়িসহ প্রতিটি ইউনিয়নে বাণিজ্যিক ও ঘরোয়াভাবে পাহাড়ি ও সমতল এলাকায় লিচুর চাষ হচ্ছে। জানা গেছে, এবার বাঁশখালীতে ৭১০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। এছাড়া মধ্যে কালীপুরের ৩০০ হেক্টর, বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ঘরোয়াভাবে সহ পুরো উপজেলায় সাড়ে ৮০০ হেক্টর বাগানে বিভিন্ন জাতের লিচুর চাষ হয়েছে। এসবের মধ্যে কালীপুরের স্থানীয় জাত ছাড়াও রাজশাহী বোম্বে, বারি, , ৩ ও ৪ এবং চায়না৩ জাতের লিচু রয়েছে।

দক্ষিণ সাধনপুর এলাকার লিচু চাষি মো. আমজাদ বলেন, আমার বাগানে প্রায় ২ শতাধিক গাছ রয়েছে। গত বছরের চেয়ে ফলন এবার কম হয়েছে, বৃষ্টি না হওয়াতে ফলন ও ভাল হয়নি।

কালীপুর ইজ্জতনগর এলাকার লিচু চাষি রবিউল ইসলাম বলেন, আমার প্রায় ২ একর জায়গাজুড়ে লিচু বাগানে আগের মত বেশি ফলন হয়নি। তারপরেও বর্তমানে লিচু বিক্রি উপেযোগী হওয়াতে পাইকারী হিসাবে প্রতি হাজার লিচু তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

কালীপুরের লিচু আকারে একটু ছোট, কিন্তু স্বাদে অতুলনীয়। তাই সারা দেশের মানুষের কাছে এখানকার লিচুর কদর আছে। উপজেলার লিচু বাগানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে থোকায় থোকায় পাকা লিচু ঝুলছে। পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালীপুর, পৌরসভা সদর জলদী হয়ে বৈলছড়িসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ি এলাকায়, সড়কের পাশে, বাড়ির আঙিনায়, লোকালয়ের বাগানে এখন শুধু লিচু আর লিচু। বাঁশখালীর অধিকাংশ লিচু কালীপুর ইউনিয়নে উৎপাদিত হয়। এখানকার লিচু রসালো ও সুস্বাদু। তাই দূরদূরান্ত থেকে লিচু ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা এসে এখান থেকে লিচু নিয়ে যান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু ছালেক বলেন, বাজারে আসতে শুরু করেছে বাঁশখালীর কালিপুরের বিখ্যাত রসালো লিচু। এবার ঝড়বৃষ্টির আধিক্য না থাকায় বাঁশখালীতে লিচুর ভাল ফলন হয়েছে। কালিপুর ইউনিয়নের ৩০০ হেক্টরসহ পুরো বাঁশখালীর ৭১০ হেক্টর বাগানে স্থানীয় ও উন্নত জাতের লিচু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহীর বোম্বে, বারি ১, , , ৪ ও চায়না৩ জাতের লিচুও চাষ হয়েছে। সাধনপুর, কালিপুর, চাম্বল, পুঁইছড়ী, বৈলছড়ীসহ বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকায় লিচু চাষ হয়েছে। আবহাওয়া এমন অনুকূল থাকলে ভাল ফলন হবে আশাবাদী। কালিপুর ঋষিধামসহ বেশ কিছু এরিয়ায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে তিনি জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনীতে নতুন মোড়ক লাগিয়ে বিক্রি, জরিমানা
পরবর্তী নিবন্ধএবার পাকিস্তানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করল ভারত