নীল আকাশের বুকে সাদা মেঘের ভেলা, নদীর তীরে কাশফুলের শোভা আর গাছে শিউলি ফুলের সমারোহ নিয়ে আসে ঋতুরাণী শরৎ। শরৎকাল আসলে বাঙালিদের মননে ও চিন্তায় শারদীয় দুর্গোৎসব এর চিত্র ভেসে ওঠে। এটি শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসবই নয়, বাঙালিদের সামাজিক অনুষ্ঠান। বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও শ্রেণির মানুষ একত্রিত হয় এই উৎসবে। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষে মহালয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় অপরপক্ষ। এরপর শুক্লপক্ষে শুরু হয় দেবীপক্ষের। দেবী দুর্গা ধনের দেবী লক্ষ্মী, বিদ্যার দেবী সরস্বতী, বীরপুত্র কার্ত্তিক ও সিদ্ধিদাতা গণেশকে নিয়ে এই ধরাধামে চিন্ময়ীরূপে মৃন্ময়ী মূর্তিতে আবির্ভূত হন। মহিষাসুরকে বধ করে তিনি স্বর্গরাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, দেবী মা এই পৃথিবীর মানুষের মধ্যে আসুরিক ভাব দূর করে সম্প্রীতি ও শান্তির বার্তা নিয়ে আসেন। একাগ্রচিত্তে দেবী মায়ের আরাধনা করলে তিনি সমস্ত দুর্গতি নাশ করেন। মৃৎশিল্পীরা তাদের তুলির আঁচড়ে দেবী মায়ের মূর্তি প্রাণবন্ত করে তোলেন। পঞ্চমীতে বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে দেবীর ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী পূজা সম্পন্ন হয়। দেবী দুর্গার দশ হাতে সজ্জিত থাকে বিভিন্ন অস্ত্র। পূজা, আরতি, অঞ্জলি, ঢাকের বাজনা ও মানুষের মিলন মেলায় দুর্গোৎসব সম্পন্ন হয়। দশমীতে হয় প্রতিমা বিসর্জন। সবাই দেবী মায়ের কাছে প্রার্থনা করে বিভিন্ন সংকট, মহামারী, আর মানুষের অসুরত্ব দূর করে বিশ্ব শান্তির।