আজকের তরুণরা নেতৃত্বে এগিয়ে আসছে, যা আশাব্যঞ্জক। তবে অনেক ক্ষেত্রেই তারা নেতৃত্বে আসছে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ও প্রস্তুতি ছাড়াই। ফলে মানবিক গুণাবলি, শিষ্টাচার ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। পাড়া–মহল্লা বা সংগঠনে অনেক নেতা আত্মপ্রচার ও অর্থলিপ্সায় নিমগ্ন, যার ফলে সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রযাত্রা বিঘ্নিত হচ্ছে। নেতৃত্বের জন্য দরকার সময়, অভিজ্ঞতা, আদর্শ ও দূরদর্শিতা। নেতৃত্ব মানে কেবল পদ নয়, এটি এক মহান দায়িত্ব। নিজের স্বার্থ ভুলে জনকল্যাণে নিবেদিত থাকার মানসিকতা না থাকলে কেউ প্রকৃত নেতা হতে পারে না।
আজ কর্মী হওয়ার আগেই নেতা হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এতে নেতৃত্বে আত্মস্বার্থ, লোভ ও অহংকার জায়গা করে নিচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য হুমকি। মুখোশধারী এ ধরনের নেতা শেষপর্যন্ত ব্যর্থ ও পরাজিত হয়।
বাঙালির আত্মপরিচয় ত্যাগের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠেছে। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যান্য জাতীয় সংকটে যাঁরা আদর্শিক নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের আত্মত্যাগ আজও জাতির কাছে গর্বের। তাঁরা কখনো আত্মপ্রচারে বিশ্বাস করতেন না, বরং মানবকল্যাণ ও সমাজ পরিবর্তনই ছিল তাঁদের মূল লক্ষ্য।
তরুণদের উচিত সেই আদর্শ ধারণ করা। নেতৃত্বে আসার আগে দরকার প্রজ্ঞা, মানবিকতা ও জনসেবার মানসিকতা। নেতৃত্ব মানেই জনকল্যাণ, দায়িত্ববোধ এবং সৎ চরিত্র। ভবিষ্যতের রাষ্ট্রনায়ক হবেন তাঁরাই, যাঁরা আত্মলোভ নয়, আদর্শকে সামনে রেখে সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণে অঙ্গীকারাবদ্ধ হবেন।