বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়, ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা

কলম্বো টেস্ট । টেস্ট ক্রিকেটে তাইজুলের ১৭তম বারের মতো ৫ উইকেট

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ২৮ জুন, ২০২৫ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

গল টেস্টের উল্টো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ কলম্বো টেস্টে। কলম্বো টেস্টের তৃতীয় দিনেই ফলাফল নিয়ে অনেকটা আঁচ করা যাচ্ছে। সিরিজের এই দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কায় পড়েছে সফরকারী বাংলাদেশ। ইনিংস হার এড়াতে হলে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ৯৬ রান করতে হবে বাংলাদেশের ব্যাটারদের। খেলার ৪র্থ দিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এমনটাই প্রতিরোধে নামতে হবে বাংলাদেশকে। প্রথম ইনিংসে ২১১ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে দিন শেষে ৬ উইকেটে ১১৫ রান করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২৪৭ রানের জবাবে ৪৫৮ রান করে শ্রীলঙ্কা। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ২১১ রানের বড় লিড পায় লঙ্কানরা।

কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২৪৭ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ২৯০ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৩ রানে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। নিশাঙ্কা ১৪৬ রানে ও প্রবাথ জয়সুরিয়া ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। তৃতীয় দিনে ব্যক্তিগত দেড়শ রান তুলে বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলামের শিকার হন নিশাঙ্কা। শর্ট কাভারে এনামুল হককে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ১৯ চারে ২৫৪ বলে ১৫৮ রান করেন তিনি। নিশাঙ্কার পর শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ৭ রানে লেগ বিফোর আউট করেন তাইজুল। তাইজুলের জোড়া আঘাতের পর সিরিজে প্রথম উইকেটের দেখা পান পেসার নাহিদ রানা। নাইটওয়াচম্যান জয়সুরিয়াকে ১০ রানে বিদায় করে দেন তিনি।

৩৩৫ রানে পঞ্চম উইকেট পতনের পর জুটি বেঁধে শ্রীলঙ্কাকে বড় সংগ্রহ এনে দেন কামিন্দু মেন্ডিস ও কুশল মেন্ডিস। তবে দুজনই শিকার হন স্পিনার নাইম হাসানের। আর্মবল ডেলিভারিতে কামিন্দুর স্টাম্প ভাঙেন নাইম। ৪১ বলে ৩৩ রান করেন কামিন্দু। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও এক প্রান্তে রানের চাকা সচল রাখেন কুশল। তার ৮ চার ও ২ ছক্কা সাজানো ৮৭ বলে ৮৪ রানের সুবাদে ৪৫৮ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলঙ্কা। এতে ২১১ রানের লিড পায় লঙ্কানরা। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সফল বোলার তাইজুল। টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৭তম বারের মতো ইনিংসে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিয়েছেন তিনি। এছাড়াও নাইম ৩টি ও রানা ১টি উইকেট নেন।

দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয়। ৬ ওভারে ৩০ রান করেন তারা। কিন্তু আসিথা ফার্নান্দোর করা সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে পুল করতে গিয়ে শর্ট লেগে ক্যাচ দেন ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৯ রান করা বিজয়। বড় ইনিংস খেলতে পারেননি আরেক ওপেনার সাদমানও। ১২ রান করে প্রবাথ জয়সুরিয়ার বলে ক্যাচ আউট হন তিনি। বাংলাদেশ আবারো ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। ৩১ রানের মধ্যে দুই ওপেনার ফেরার পর জুটি বাঁধেন মোমিনুল হক ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু মোমিনুল ও শান্তকে বড় ইনিংস খেলতে দেননি শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। মোমিনুল ১৫ ও শান্ত ১৯ রানে ডি সিলভার বলে আউট হন।

৭০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলের রান ১০০তে নেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। দলীয় রান তিন অংকের ঘরে পৌঁছানোর পরই সাজঘরে ফিরেন মুশফিক। জয়সুরিয়ার বলে বোল্ড হন ২৬ রান করা মুশফিক। দিনের শেষটা ভালোভাবে শেষ করার দায়িত্ব ছিল দুই অভিজ্ঞ লিটন ও মেহেদি হাসান মিরাজের। কিন্তু থারিন্দু রত্নায়েকের বলে লেগ বিফোর আউট হন ১১ রান করা মিরাজ। তার আউটের পর দিনের খেলা শেষ হয়। ১৩ রানে অপরাজিত আছেন লিটন। শ্রীলঙ্কার জয়সুরিয়া ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ২টি করে উইকেট নেন। টেস্টের চতুর্থ দিনে আজ বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার আক্রমণ ঠেকিয়ে কতটা টিকতে পারে সেটাই হবে দেখার বিষয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবান্দরবানে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
পরবর্তী নিবন্ধটেকনাফে বিলের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু