পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের প্রথম জয়। নিজেদের দেশে পাকিস্তান এ নিয়ে ২৭টি টেস্ট হারল। কিন্তু ১০ উইকেটে হার এই প্রথম। এমন বিবর্ণ পারফরম্যান্সকে ‘বড় শিক্ষা’ বলেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ। এই টেস্ট পঞ্চম দিনে যাবে না বলেও ধারণা করেছিলেন তিনি। রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট শুরুর পর থেকে সাবেকদের কড়া সমালোচনার তিরে বিদ্ধ মাসুদ গতকাল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমরা যেমন ধারণা করেছিলাম, এই পিচ তেমন আচরণ করেনি। ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডির আবহাওয়াও সুবিধাজনক ছিল না। এখানে টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শুরুর আগে ৮–৯ দিন বৃষ্টি হয়েছে। তবে হার নিয়ে আমি কোনো অজুহাত দাঁড় করাতে চাই না।’
পিচে ঘাস থাকায় পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট ভেবেছিল, এটি পেস সহায়ক হবে। তাই দলে স্বীকৃত কোনো স্পিনার না রেখে চার পেসার নিয়ে একাদশ সাজায় স্বাগতিকেরা। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামার পর উইকেট ধীরে ধীরে মন্থর হয়ে পড়ে। পেসাররা উইকেট থেকে কোনো ধরনের গতি ও বাউন্স পাননি। পাকিস্তান যে উইকেট পড়তে ভুল করেছে, তা গতকাল স্বীকার করেছেন মাসুদ, ‘প্রথমবার উইকেট দেখার পর আমরা আরেকটু বেশি আশা করেছিলাম। একাদশে তিন পেসার থাকলে তাদের সামর্থ্যের শেষ সীমায় পৌঁছে যেতে হতো। একজন স্পিনার খেলালে তাকে হয়তো দিনে ২৫–৩০ ওভার করতে হতো। কিন্তু আমরা সেটা এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম, এ ধরনের আবহাওয়ায় ম্যাচ পঞ্চম দিনে যবে না। দিন শেষে আমরা ভুল প্রমাণিত হয়েছি।’ যথেষ্ট রান হয়েছে ভেবে ৬ উইকেটে ৪৪৮ তুলে প্রথম ইনিংস ছেড়ে দেন মাসুদ। তবে রানের পাহাড় গড়েও পাকিস্তানকে একমুহূর্তও স্বস্তিতে থাকতে দেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। মুশফিকুর রহিমের ১৯৩, সাদমান ইসলামের ৯৩ আর মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন দাস ও মোমিনুল হকের ফিফটিতে প্রথম ইনিংসে ১১৭ রানের লিড নেয় সফরকারীরা। ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা নিয়ে মাসুদ বলেছেন, ‘আমরা ম্যাচটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। ব্যাটিংয়ের পর বোলিং ও ফিল্ডিংয়েও ভালো করে তাদের (বাংলাদেশকে) অল্পতেই বেঁধে ফেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের ধারণা ভুল ছিল। চাপের মুখে এ রকম অনেক কিছু ঘটতে পারে।’ আগামী শুক্রবার রাওয়ালপিন্ডিতেই শুরু সিরিজের শেষ টেস্ট। সেই ম্যাচে স্পিনার খেলাবেন কি না, সঞ্চালক বাজিত খানের এই প্রশ্নে মাসুদ বলেন, ‘দলে স্পিনারদের জন্য সব সময় জায়গা থাকে। আমরা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিডনি টেস্টে সাজিদ খানকে খেলিয়েছি। এ ম্যাচে চার পেসার নিয়ে খেলানোর পরিকল্পনা কাজে দেয়নি। এখন একই মাঠে বিভিন্ন ধরনের উইকেট বানানো হচ্ছে। কন্ডিশনকে সম্মান জানাতে হবে। একই ভুল আর করা যাবে না। নিজেদের কন্ডিশনে আমরা কী আশা করতে পারি, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।’