বাংলাদেশের ঋণমান সূচক আবারও কমিয়েছে ফিচ। ছয় মাসের মধ্যে লং টার্ম ফরেন কারেন্সি ইস্যুয়ার ডিফল্ট রেটিং (আইডিআর) ‘বিবি মাইনাস’ থেকে ‘বি প্লাস’ এ নামিয়ে আনা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পূর্বাভাস (আউটলুক) স্থিতিশীল থাকবে বলে আভাস দিয়েছে। গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে রেটিং কমানোর তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি এর কারণ হিসেবে বিদেশি ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়াকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। খবর বিডিনিউজের।
সামপ্রতিক সময়ে বিভিন্ন খাতে নীতি সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা ২০২২ সালের পর থেকে ক্রমাগত রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং ডলার সংকট ঠেকাতে যথেষ্ট নয় বলে এ বিষয়ক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থাটি।
এর আগে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি বাংলাদেশের আইডিআর সূচক ‘নেতিবাচক’ করে, আগে যা ছিল ‘স্থিতিশীল’। তখন এক বছর আগের দেওয়া রেটিং ‘বিবি মাইনাস’ বহাল রাখা হয়। প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দেওয়া আইডিআর সূচকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ‘স্থিতিশীল’ বলে জানিয়েছিল।
এর আগে গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক রেটিং এজেন্সি মুডিস, এসঅ্যান্ডপি (স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস) ঋণমানের অবনমন করেছে। গতকাল সোমবার নিজেদের ওয়েবসাইটে তুলে ধরা এ বিষয়ক ঘোষণায় আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থাটি সূচকের অবনতি হওয়ার কারণও তুলে ধরেছে।
প্রতিবেদনে ফিচ বলেছে, বিনিময় মূল্যহারে স্থিতিশীলতা আনতে সমপ্রতি ডলারের মূল্য নির্ধারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করেছে। এটি অস্থিতিশীল বিদেশি মুদ্রা বাজারের সংকট কাটাতে কতটুকু ভূমিকা রাখবে এবং রিজার্ভ বাড়াতে কতটুকু সহায়তা করবে তা অস্পষ্ট। রেটিং নেতিবাচক করার কারণ হিসেবে আরও বলা হয়েছে, রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং ডলারের সরবরাহ সংকট বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ পরিশোধের মত বাহ্যিক বিষয়গুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। আউটলুক স্থিতিশীল পূর্বাভাস মানে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকবে। আইএমএফের মত বিদেশি ঋণদাতা সংস্থাগুলোর সহায়তায় বহি:স্থ ঋণ পরিশোধের ঝুঁকি কমানোর সামর্থ্য এবং ঋণ চুক্তির আওতায় আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটির পরামর্শে পরিচালিত সংস্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনীতি এবং ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার মত পদক্ষেপগুলো অর্থনীতি স্থিতিশীল হওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা নিয়ে দেওয়া এ প্রতিবেদনে ফিচ রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে পুঁজি পাচার, প্রবাসী আয় আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে না আসা, মুদ্রার বিনিময়হার, সরকারের ঋণ, বিদেশি ঋণ, রাজস্ব আয় এবং এ খাতে সংস্কারের মত বিষয়গুলো তুলে ধরেছে।