বাংলাদেশী স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যান্টারবেরি (বিএসএইউসি), ক্রাইস্টচার্চ বিনম্র শ্রদ্ধায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে। এ উপলক্ষে বিএসএইউসি গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউনিভার্সিটি অফ ক্যান্টারবেরি (ইউসি), ক্রাইস্টচার্চ নিউজিল্যান্ডের আন্ডারক্রফ্ট ১০১, ইলাম ক্যাম্পাসে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী ছাত্র, প্রাক্তন ছাত্রদের পাশাপাশি অন্য ভাষাভাষি শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেন।
মোহাম্মদ রফির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি ড. মেসবাহউদ্দিন চৌধুরী। তিনি এই দিনের ঐতিহাসিক পটভূমির চিত্র তুলে ধরেন এবং যে কোনো জাতি গঠনের কাজে ভাষার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ঐতিহাসিক বিবর্তন সম্বলিত একটি তথ্যবহুল ভিডিওচিত্র প্রদর্শিত হয়। মো. আওরঙ্গজেবের নেতৃত্বে সমবেত কন্ঠে একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ পরিবেশনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর দানি ফারাজি ও পিটার ফার্সি ভাষায় একটি ইরানী কবিতা আবৃত্তি করেন। মোহিত সিং থাগুন্নার নেপালি ভাষার একটি উপস্থাপনা এবং উইনেট বালাতবাটের একটি ফিলিপিনো কবিতা আবৃত্তিও ছিল মনকাড়া। বিএসএইউসি রিকারটন হাই স্কুলের প্যাসিফিক ভাষার দুই শিক্ষক তাদের ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার গুরুত্বের ওপর আলোচনা করেন। তারা টোঙ্গা এবং কুক দ্বীপের প্রেক্ষাপটে তাদের চিন্তাভাবনা শেয়ার করেছেন। এরপর মো. আওরঙ্গজেব পরিবেশন করেন আরেকটি অমর সঙ্গীত ‘রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন’। এরপর শিশু শিল্পী শায়ান সিদ্দিকী টপ্পা পরিবেশন করে একক গান ‘আয় তবে সহচরী’, ইউসি প্রাক্তন ছাত্র ডঃ আবু সালাহউদ্দিন আবৃত্তি করে ‘মাতৃভূমির জন্য’ কবিতাটি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বেলজিয়ামে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. মাসুদুল কবির এবং তার স্ত্রী শামসুন নাহার রুবি। অনুষ্ঠানে শামসুন নাহার রুবির একটি কবিতার বই অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। তিনি আবৃত্তি করেন আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর ‘মাগো, ওরা বলে’ কবিতাটি। তাদের ছেলে অভ্র ডি কবির, একজন ইউসি প্রাক্তন ছাত্র, এই বইটি লেখার জন্য তার মায়ের অনুপ্রেরণাও শেয়ার করেছেন। এরপর একক সঙ্গীত ‘আমার গেঁথে দাওনা মাগো’ পরিবেশন করেন মোনালি আলম। পরে তিনি ও শম্পা পালমার একটি দ্বৈত সঙ্গীত পরিবেশন করেন। ডা. স্বর্ণালী অতসি তিসির নেতৃত্বে সমবেত সঙ্গীত ‘মোদের গরব মোদের আশা’ পরিবেশিত হয়। শিশু শিল্পী রামিসা আবৃত্তি করে নজরুলের ‘সৃষ্টি সুখের উল্লাসে ’ কবিতাটি। ‘বাড়িয়ে দাও তোমার হাত’ পরিবেশন করে মোহাম্মদ রাফি। সবশেষে ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায়’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।