বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ বিজ্ঞানী সাদিয়ার সাফল্য

করোনা প্রতিরোধী স্প্রে আবিষ্কার

| শুক্রবার , ৯ জুলাই, ২০২১ at ৬:৫৮ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে এরকম একটি জীবাণুনাশক স্প্রে আবিষ্কার করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক তরুণ ব্রিটিশ বিজ্ঞানী। তার নাম সাদিয়া খানম। বয়স ২৬। দেড় বছর ধরে গবেষণার পর ভলটিক নামের এই জীবাণুনাশক তৈরি করেছেন তিনি যা যেকোনো বস্তুর সারফেসে স্প্রে করা হলে দুই সপ্তাহের জন্য জীবাণুমুক্ত থাকবে। কোভিড মহামারি মোকাবেলায় এই উদ্ভাবনকে বড় ধরনের আবিষ্কার হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে এবং ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা এনএইচএসসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিরীক্ষার পর এটিকে অনুমোদন দিয়েছে। খবর বিবিসি বাংলার।ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর সাদিয়া খানম তার পিএইচডি গবেষণা স্থগিত রেখে উত্তর পশ্চিম ইংল্যান্ডের চেশায়ারে তার পিতার রেস্তোরাঁয় এই ভাইরাসটি নিয়ে প্রাথমিক গবেষণা শুরু করেন।
গবেষণায় এই ভাইরাসটিকে ধ্বংস করার জন্য তিনি নানা রকমের সমীকরণের সন্ধান করতে থাকেন। এবং এক পর্যায় এরকম একটি কার্যকরী ইকুয়েশন উদ্ভাবন করতে সক্ষম হন। তিনি এর নাম দিয়েছেন ভলটিক যা সংক্রামক রোগজীবাণু নাশের একটি প্রক্রিয়া এবং এটি উচ্চমানের সুরক্ষা দিয়ে থাকে। বিশেষ একটি মেশিন দিয়ে এই তরল স্প্রে করতে হয়।
সাদিয়া খানম জানান, এটি চামড়া থেকে শুরু করে কাঠ, লোহা থেকে কাপড় সব ধরনের সারফেসের ওপর কাজ করে বলে গবেষণায় তিনি দেখতে পেয়েছেন।
তিনি বলেন, অনেক জীবাণুনাশক বিষাক্ত। কিন্তু তার ভলটিক স্প্রে যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিকর না হয় কিংবা বর্তমানে ও ভবিষ্যতে যাতে এর কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না দেয় সে বিষয়ে তাকে সতর্ক থাকতে হয়েছে।
বিজ্ঞানী সাদিয়া খানম দাবি করেন ভলটিক সব ধরনের ভ্যারিয়্যান্টের বিরুদ্ধে কাজ করে। তিনি বলেন, আমি এই ভাইরাসের আসল স্ট্রেইন নিয়ে কাজ করেছি। যেহেতু আমি করোনাভাইরাসের আসল জিনিসটিকে মেরে ফেলতে সক্ষম হয়েছি, তাই এটি অন্যান্য ধরনের করোনাভাইরাসও ধ্বংস করতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, ‘যখনই এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি একটি ঘরে প্রবেশ করে, তখন সেই ঘরের ভেতরে জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। সারাক্ষণ ঘরের সবকিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা কঠিন। কিন্তু এই ভলটিক স্প্রে দিয়ে ঘরটিকে সারাক্ষণই জীবাণুমুক্ত রাখা সম্ভব। যেমন- আমি যদি কোনো একটি ঘর ভলটিক দিয়ে পরিষ্কার করি তাহলে ওই ঘরটি ১৪ দিনের জন্য সুরক্ষিত থাকবে।
তার আবিষ্কৃত ভলটিক স্প্রে সব ধরনের করোনাভাইরাস, ইবোলা ভাইরাস, এভিয়েন ফ্লু, ইনফ্লুয়েঞ্জা এ, সার্স, এইচআইভি বি এবং অন্যান্য জীবাণু ধ্বংস করতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ব্রিটেনে জীবাণুনাশক সংক্রান্ত বিভিন্ন দফতর ও কর্তৃপক্ষও ভলটিক স্প্রের ওপর ট্রায়াল সম্পন্ন করে এটিকে অনুমোদন দিয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই এটি ব্যবহারের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। বলা হচ্ছে কোভিড নিরাপত্তার ব্যাপারে এই উদ্ভাবন অনেক বড় একটি পদক্ষেপ।
সাদিয়া খানম বলছেন, ভলটিক স্প্রের উদ্ভাবন আলঝাইমার্স রোগের ওষুধ আবিষ্কারের ব্যাপারে তাকে অনেক আশাবাদী করে তুলেছে। তিনি বিশ্বাস করেন তার স্বপ্ন একদিন পূরণ হবে।
স্যালফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বায়োমেডিকেল সায়েন্স এবং চেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় জিনোমিক মেডিসিন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসছে আরও ৫০০ ইএফডি মেশিন
পরবর্তী নিবন্ধপ্রধান আসামি নয়নের গ্রেপ্তার নিয়ে ধুম্রজাল